চ্যালেঞ্জিং পাজল: ব্রিটিশ চ্যাম্পিয়নশিপে নাম লেখানো!

ব্রিটিশ জিগস চ্যাম্পিয়নশিপ: ধাঁধা মেলানোর এক আন্তর্জাতিক আসর। বিশ্বজুড়ে জিগস ধাঁধার জনপ্রিয়তা বাড়ছে, আর এর সঙ্গেই বাড়ছে এই ধরনের প্রতিযোগিতার উন্মাদনা।

যুক্তরাজ্যের নিউমার্কেটে অনুষ্ঠিত হওয়া ‘ব্রিটিশ জিগস চ্যাম্পিয়নশিপ’ তেমনই একটি প্রতিযোগিতা, যেখানে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন প্রতিযোগীগণ। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া এই প্রতিযোগিতার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের বাজারে জিগস ধাঁধার চাহিদা বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। ২০২২ সালে প্রায় ২৪ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ধাঁধা বিক্রি হয়েছিল, যা এই খেলার প্রতি মানুষের আগ্রহের প্রমাণ।

ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৮ সাল নাগাদ এই ব্যবসার আরও ৩.২১% বৃদ্ধি ঘটবে। এই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ‘এলিট’ বিভাগে প্রতিযোগীরা ১০০০ টুকরোর একটি ধাঁধা তিন ঘণ্টার কম সময়ে মেলানোর চেষ্টা করেন।

প্রতিযোগিতার আকর্ষণীয় দিক হলো এর পুরস্কার মূল্য। বিজয়ীর জন্য ছিল ১০০ পাউন্ড, যা বাংলাদেশি টাকায় একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ।

প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া একজন, যিনি পেশায় সাংবাদিক, তিনি জানান, এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়াটা তাঁর জন্য ছিল একটি নতুন অভিজ্ঞতা। প্রস্তুতি হিসেবে তিনি অনলাইনে ধাঁধা কেনা শুরু করেন, কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় পুরনো ধাঁধা বিক্রেতাদের দিকে ঝুঁকতে হয়।

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের আগে তিনি বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে অনুশীলন করেন।

প্রতিযোগিতার দিন, প্রতিযোগীদের মধ্যে ছিল তীব্র উত্তেজনা। সবার টেবিলে সাজানো ছিল হাজারো টুকরোর ধাঁধা। সকলের লক্ষ্য ছিল দ্রুততম সময়ে ধাঁধাটি সম্পন্ন করা।

প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সারা মিলস নামের একজন প্রতিযোগী ২০১৯ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিলেন। তিনি জানান, প্রতিযোগিতার সময় তাঁর মধ্যে অ্যাড্রেনালিন বেড়ে যায়, তাই তিনি নিজের কাজের ওপর মনোযোগ দেন এবং অন্যদের কথা ভাবেন না।

প্রতিযোগিতার আয়োজক জ্যানেট রামসে-হেলি জানান, এই প্রতিযোগিতার শুরুটা হয়েছিল বন্ধুদের মাধ্যমে পাওয়া একটি ধারণা থেকে। ধীরে ধীরে এর জনপ্রিয়তা বাড়ে এবং এখন এটি আন্তর্জাতিক রূপ নিয়েছে।

প্রতিযোগিতার পরিবেশ ছিল খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। বিজয়ীদের অভিনন্দন জানাতে গিয়ে সাংবাদিক নিজেও স্বীকার করেন, তিনি নির্ধারিত সময়ে ধাঁধাটি শেষ করতে পারেননি।

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের একটি সুন্দর চিত্র দেখা যায়। পিটার এবং নিকি থমাস নামের এক দম্পতি এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন এবং তাঁরা ‘পিয়ার্স’ বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন।

তাঁদের কৌশল ছিল, ধাঁধাটিকে দুটি অংশে ভাগ করে কাজ করা। পিটার উল্টো করে ধাঁধা তৈরি করেন এবং নিকি মুখগুলোর ছবি মেলানোর কাজটি করেন।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, এই ধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মানুষজন নতুন বন্ধু খুঁজে পায় এবং একটি বিশেষ কমিউনিটিতে যুক্ত হয়। সবার মধ্যে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়, যা এই প্রতিযোগিতার অন্যতম আকর্ষণ।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *