অস্ট্রেলিয়ার একজন রেডিও ব্যক্তিত্ব, অ্যাশ লন্ডন, অপ্রত্যাশিতভাবে খুঁজে পেয়েছিলেন তার ভালোবাসার মানুষটিকে। প্রেম প্রথম দর্শনেই হয় – এমন ধারণা অনেকের কাছেই সিনেমার গল্পের মতো।
কিন্তু অ্যাশের জীবনে ঘটেছিল সেটাই, যা তিনি নিজেও কোনোদিন বিশ্বাস করেননি। ঘটনাক্রমে, ২০১৬ সালের নভেম্বরের এক বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যায়, সিডনির একটি অনুষ্ঠানে তাদের প্রথম দেখা হয়।
অ্যাশের কর্মজীবন ছিল রেডিওতে, এবং একটি কঠিন সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর তিনি যেন ভালোবাসার প্রতি বিমুখ হয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে, ‘আরিয়া মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস’-এ যোগ দিতে গিয়েছিলেন তিনি।
ঝলমলে আলো আর উৎসবের মধ্যে, ভিড়ের মাঝে তিনি প্রথমবার দেখেন অ্যাড্রিয়ানকে। সুদর্শন অ্যাড্রিয়ানের চোখে চশমা, পরিপাটি করে বাঁধা চুল, পরনে কালো স্যুট – প্রথম দেখাতেই অ্যাশের মনে হয়েছিল, এই মানুষটিই তার জীবনসঙ্গী।
তাদের আলাপ হয় অনুষ্ঠানের পরে, একটি হোটেলে। সেখানে তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে গল্প করেন, যেন তারা বহু বছর ধরে একে অপরের পরিচিত। তাদের মধ্যে গভীর এক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তারা তাদের পরিবার, বেড়ে ওঠা, এবং ভ্রমণের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন। অ্যাশ অনুভব করেছিলেন, এই মানুষটির সঙ্গেই তিনি সারা জীবন কাটাতে চান।
তাদের সম্পর্কের এক পর্যায়ে, যখন তারা ভিন্ন শহরে থাকতেন, ভিডিও কলে কথা বলার সময় অ্যাশ অনিচ্ছাকৃতভাবে ‘ভালোবাসি’ বলে ফেলেন। দ্রুত কলটি কেটে দিলেও, তিনি বুঝতে পারছিলেন, তিনি মিথ্যা বলতে পারবেন না।
কারণ, তিনি সত্যিই অ্যাড্রিয়ানকে ভালোবাসতেন। অ্যাড্রিয়ান যখন কল ব্যাক করেন, তখন তার চোখেমুখে ছিল ভালোবাসার হাসি।
এরপর, মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে তারা একটি সুন্দর রুবি পাথরের আংটি কেনেন। এক বছর পর, ব্লু মাউন্টেনসের একটি নির্জন কেবিনে অ্যাড্রিয়ান তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
তাদের ভালোবাসার সাক্ষী ছিল না কোনো তারকাখচিত পরিবেশ, ছিল না ঝলমলে আলোর উৎসব। ছিল শুধু দু’জনের দু’জনের প্রতি গভীর ভালোবাসা।
বর্তমানে, অ্যাশ এবং অ্যাড্রিয়ান বিবাহিত এবং তাদের একটি ফুটফুটে তিন বছর বয়সী ছেলে রয়েছে। তাদের দাম্পত্য জীবন সবসময় সহজ ছিল না, তবে একে অপরের প্রতি তাদের ভালোবাসা ছিল অটুট।
অ্যাশের এই ভালোবাসার গল্প, যা তিনি তার বইতেও উল্লেখ করেছেন, ভালোবাসার গভীরতা এবং অপ্রত্যাশিত পথে ভালোবাসার আগমনকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান