পোপ ফ্রান্সিস: গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান, অসুস্থ অবস্থাতেও ইস্টার উৎসবে অংশগ্রহণ।
ভ্যাটিকানে ইস্টার সানডে উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পোপ ফ্রান্সিস গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। গুরুতর অসুস্থতা থেকে সেরে ওঠার পর, সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে সমবেত হাজারো ক্যাথলিক তীর্থযাত্রীর উদ্দেশ্যে দেওয়া সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি এই আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের ১৮ মাসের যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট “দুর্দশাগ্রস্ত মানবিক পরিস্থিতি”র কথা উল্লেখ করে ৮৮ বছর বয়সী পোপ এই মন্তব্য করেন।
পোপ ফ্রান্সিস তাঁর ‘উরবি এত অর্বি’ (শহর ও বিশ্বের প্রতি) বার্তায় ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি উভয় সম্প্রদায়ের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি হামাসকে তাদের হাতে বন্দী অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান এবং বিশ্বে ক্রমবর্ধমান ইহুদি বিদ্বেষের নিন্দা করেন।
পোপ বলেন, “আমি যুদ্ধরত পক্ষগুলোর প্রতি যুদ্ধবিরতি ঘোষণার, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার এবং ক্ষুধার্ত মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি, যারা শান্তির ভবিষ্যৎ কামনা করে।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পাঁচ সপ্তাহ ধরে তিনি ইতালির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। জানুয়ারিতে তিনি গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সমালোচনা করে এই পরিস্থিতিকে “খুবই গুরুতর ও লজ্জাজনক” বলেছিলেন।
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বর্তমানে তিনি সুস্থ হওয়ার পথে রয়েছেন। সাধারণত, পোপ পুরো অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, তবে এবার তাঁর পরিবর্তে কার্ডিনাল অ্যাঞ্জেলো কোমাস্ত্রি এই দায়িত্ব পালন করেন।
ভ্যাটিকান থেকে আল জাজিরার প্রতিনিধি জেমস বে বলেন, “পোপ গুরুতর অসুস্থ ছিলেন, ৩৮ দিন হাসপাতালে ছিলেন, তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল, কিডনির সমস্যা ছিল এবং চিকিৎসকরা একসময় তাঁর জীবন নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন।”
পোপের শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি আমার সাধ্যমতো এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি।”
এদিকে, ভ্যাটিকান এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রবিবার সকালে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের সাথে পোপ ফ্রান্সিসের একটি ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ হয়েছে। এই সাক্ষাতে তাঁরা ইস্টার উৎসবের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এর আগে শনিবার ভ্যান্স ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি অফ স্টেট কার্ডিনাল পিট্রো পারোলিন এবং সেক্রেটারি ফর রিলেশনস উইথ স্টেটস, পল রিচার্ড গ্যালাঘেরের সঙ্গেও আলোচনা করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি, বিশেষ করে অভিবাসী ও শরণার্থীদের বিতাড়ন এবং বৈদেশিক সাহায্য ও অভ্যন্তরীণ কল্যাণমূলক কর্মসূচিতে ব্যাপক কাটছাঁটের পরিকল্পনার বিষয়ে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে তাঁদের মতবিরোধ ছিল। পোপ এই অভিবাসন নীতিকে “অসম্মানজনক” হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা