আঠারো শতকের প্রেক্ষাপটে লেখা জেন অস্টিনের কালজয়ী উপন্যাস ‘প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’। এই উপন্যাসের চলচ্চিত্র রূপান্তর আজও দর্শক হৃদয়ে গেঁথে আছে।
২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া জো রাইট পরিচালিত এই ছবিতে এলিজাবেথ বেনেট ও মি. ডার্সি চরিত্রে অভিনয় করেছেন কেইরা নাইটলি এবং ম্যাথিউ ম্যাকফ্যাডেন।
ছবিটির একটি বিশেষ দৃশ্য, যা আজও ইন্টারনেট দুনিয়ায় আলোচনার বিষয়, তা হলো—মি. ডার্সি যখন এলিজাবেথকে ঘোড়ার গাড়িতে উঠতে সাহায্য করেন, সেই মুহূর্তের একটি বিশেষ ভঙ্গি।
এই দৃশ্যটি নিয়ে আজকের আলোচনা।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই ছবিতে, অভিনেতা ম্যাথিউ ম্যাকফ্যাডেন এর ‘হ্যান্ড ফ্লেক্স’ বা হাতের সামান্য ভঙ্গিমা দর্শকদের মন জয় করেছে।
এলিজাবেথকে গাড়িতে তোলার পরে ডার্সি’র হাতের সেই সামান্য নাড়াচাড়া, যা ভালোবাসার প্রথম উন্মেষের ইঙ্গিত দেয়, তা দর্শকদের মনে গভীর রেখাপাত করেছে।
এই দৃশ্যটি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে, এটি নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে, এমনকি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে নিবন্ধও লেখা হয়েছে।
মি. ডার্সি’র এই অভিব্যক্তি যেন দর্শকদের কাছে ভালোবাসার এক নতুন সংজ্ঞা তৈরি করেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই দৃশ্যে ভালোবাসার গভীরতা ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন পরিচালক।
ছবিতে, তাদের চরিত্রের দ্বন্দ্ব এবং সম্পর্কের গভীরতা বোঝানোর জন্য এই ধরনের সূক্ষ্ম অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করা হয়েছে।
এই বিষয়টি দর্শকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে, কারণ এখানে ভালোবাসার প্রকাশ ছিল খুবই শান্ত ও মার্জিত।
এই প্রসঙ্গে, ছবির পরিচালক জো রাইট জানিয়েছেন, দৃশ্যটি চিত্রনাট্যে সরাসরি উল্লেখ ছিল না।
তবে, অভিনেতা ম্যাথিউ ম্যাকফ্যাডেনের অভিনয়-দক্ষতা এই দৃশ্যটিকে আরও জীবন্ত করে তুলেছে।
তিনি আরও জানান, “তাদের (ডার্সি ও এলিজাবেথ) মন একে অপরের বিরুদ্ধে লড়লেও, শরীর যেন চুম্বকের মতো একে অপরের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে।
সামান্য স্পর্শের মধ্যে দিয়ে যেন তাদের মধ্যে এক অদৃশ্য তরঙ্গ খেলে যায়, যা তারা অনুভব করে, কিন্তু প্রকাশ করতে পারে না।”
কেইরা নাইটলিও এই দৃশ্যের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছেন।
তিনি বলেন, “ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে নারী ও পুরুষের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক ছিল খুবই সীমিত।
তাই, যখন ডার্সি এলিজাবেথকে গাড়িতে উঠতে সাহায্য করেন, তখন তাদের মধ্যেকার প্রথম স্পর্শ হয়, যা খুবই আকর্ষণীয় ছিল।
আজকের দিনে আমরা হয়তো সেটিকে সেভাবে গুরুত্ব দিই না, কিন্তু তখনকার সময়ে এর গভীরতা ছিল অনেক।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই দৃশ্যটি নিয়ে আলোচনা আজও বিদ্যমান।
অনেকে মনে করেন, এটি ভালোবাসার সূক্ষ্ম অনুভূতির এক দারুণ উদাহরণ।
যেখানে কোনো কোলাহল নেই, বরং আছে গভীরতা ও নীরবতা।
এছাড়াও, এই ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয়, পোশাক এবং দৃশ্যের নান্দনিকতাও দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
যারা ক্লাসিক ভালোবাসেন, তাদের জন্য ‘প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’ আজও একটি প্রিয় ছবি।
ছবিটি ভালোবাসার এক অন্যরকম সংজ্ঞা দেয়, যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আকৃষ্ট করে।
ছবিটি আবার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে, যা দর্শকদের জন্য একটি দারুণ সুযোগ।
তথ্যসূত্র: পিপলস