বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করার জন্য আবারও অভিযানে নামছেন খ্যাতিমান শেরপা গাইড, ৫৬ বছর বয়সী কামি রিতা। আসন্ন বসন্তের এই সময়ে তিনি একুশ শতকের শ্রেষ্ঠ কীর্তি গড়তে চলেছেন।
৩১ বারের জন্য এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি, যা হবে একটি বিশ্বরেকর্ড। শুধু তাই নয়, আবহাওয়ার অনুকূল পরিস্থিতি থাকলে তিনি হয়তো এই অভিযানে ৩২ বারের মতো এভারেস্ট জয় করে নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙবেন।
কয়েক দশক ধরে পর্বতারোহন জগতে কামি রিতার খ্যাতি আকাশচুম্বী। নেপালের কাঠমান্ডু বিমানবন্দর থেকে রোববার তিনি এভারেস্টের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন একদল অভিযাত্রী, যাদের তিনি গাইড করবেন।
“আমি মানসিকভাবে, আবেগিকভাবে এবং শারীরিকভাবে পর্বত আরোহণের জন্য প্রস্তুত,” কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এমনটাই জানান কামি রিতা। তিনি আরও বলেন, “এখন আমি আমার সেরা শারীরিক অবস্থায় আছি।
ইতিমধ্যে, সবচেয়ে বেশিবার এভারেস্ট জয়ের রেকর্ড তাঁর দখলেই রয়েছে। এর আগে ৩০ বার তিনি সফলভাবে এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছেন। গত বছরও তিনি দু’বার এভারেস্ট জয় করেন।
কামি রিতা বলেন, “আমার প্রথম কাজ হলো আমার ক্লায়েন্টদের (সঙ্গে যাওয়া পর্বতারোহী) নিরাপদে চূড়ায় পৌঁছে দেওয়া। এরপর আমি সিদ্ধান্ত নেব যে, এই মৌসুমে আমি একবারের বেশি আরোহণ করব কিনা।
এটা নির্ভর করবে পাহাড়ের পরিস্থিতি এবং আবহাওয়ার ওপর। কামি রিতার সবচেয়ে কাছের প্রতিদ্বন্দ্বীও একজন শেরপা গাইড, তাঁর নাম পা সাङ দাওয়া।
তিনি এখন পর্যন্ত ২৭ বার এভারেস্ট জয় করেছেন। ১৯৯৪ সালে প্রথমবার এভারেস্ট জয় করেছিলেন কামি রিতা।
এরপর থেকে প্রতি বছরই তিনি এই অভিযানে অংশ নিয়ে আসছেন। বিদেশি পর্বতারোহীদের কাছে তিনি একজন নির্ভরযোগ্য গাইড। বিদেশি আরোহীদের সফলতার জন্য শেরপাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কামি রিতার বাবাও ছিলেন একজন শেরপা গাইড। এভারেস্ট ছাড়াও, তিনি কে-টু, চো ওইউ, মানাসলু এবং লোৎসের মতো বিশ্বের আরও কয়েকটি উঁচু পর্বতশৃঙ্গে সফলভাবে আরোহণ করেছেন।
নেপালের পর্যটন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এই বছর দক্ষিণ দিক থেকে এভারেস্ট জয়ের জন্য ২১৪ জন পর্বতারোহীকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সাধারণত এপ্রিল ও মে মাসে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এই সময়েই এভারেস্ট ও আশেপাশের পর্বতগুলোতে আরোহণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৫৩ সালে নিউজিল্যান্ডের এডমন্ড হিলারি এবং নেপালী শেরপা তেঞ্জিং নোরগে প্রথম এভারেস্ট জয় করেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস