লন্ডন প্রবাসী নাইজেরীয় শিল্পী ওবাংজায়ার-এর সঙ্গীত যাত্রা, অন্তরের লুকানো সুর থেকে বিশ্ব জয়।
সঙ্গীত জগতে নিজের স্থান তৈরি করতে পারাটা সহজ কথা নয়। এর জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, একাগ্রতা আর নিজের প্রতি বিশ্বাস। নাইজেরিয়া থেকে উঠে আসা শিল্পী ওবাংজায়ার (Obongjayar), যাঁর আসল নাম স্টিভেন উমোহ, সেই বিরল প্রতিভার অধিকারী।
এক দশকের বেশি সময় ধরে সঙ্গীতের বিভিন্ন ধারায় বিচরণ করে তিনি জয় করেছেন শ্রোতাদের মন। হিপ-হপ থেকে শুরু করে আফ্রোবিট, পরীক্ষামূলক ইলেকট্রনিক মিউজিক, এমনকি স্পোকেন ওয়ার্ড-এর মতো ভিন্ন ধারার সঙ্গীতেও ওবাংজায়ারের অবাধ বিচরণ। সম্প্রতি তিনি তাঁর দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘প্যারাডাইজ নাও’ (Paradise Now) নিয়ে এসেছেন, যা ইতোমধ্যে সঙ্গীত সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
ওবাংজায়ারের বেড়ে ওঠা নাইজেরিয়ার ক্যালবারে। শৈশবে তিনি ছিলেন ভীষণ লাজুক। তবে তাঁর দাদী, যিনি তাঁর দেখাশোনা করতেন, তিনিই ছিলেন তাঁর অনুপ্রেরণা।
দাদীর উৎসাহেই ধীরে ধীরে লাজুকতা কাটিয়ে সঙ্গীতচর্চায় মনোনিবেশ করেন ওবাংজায়ার। তাঁর কথায়, “আর্ট হলো এমন একটা ভাষা, যা সবার কাছে বোধগম্য হওয়া উচিত।”
‘প্যারাডাইজ নাও’ অ্যালবামটিতে পরিবার, সময়, সম্পর্ক, বিশ্বাস, আত্ম-অনুসন্ধান এবং ব্রিটিশ সরকারের প্রতি তাঁর ক্ষোভের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। এই অ্যালবামে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তাঁর স্বকীয়তা বিশেষভাবে লক্ষণীয়।
গানের কথায় গভীরতা এবং সুরে ভিন্নতা—উভয় দিকেই ওবাংজায়ারের মুন্সিয়ানা মুগ্ধ করার মতো। তাঁর গানের অনুপ্রেরণা আসে শিল্পী ফেলা কুটি এবং বব মার্লের মতো কিংবদন্তিদের থেকে।
ওবাংজায়ারের সঙ্গীত জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো অন্যদের সঙ্গে তাঁর সহযোগিতা। ফ্রেড এগেইন এবং লিটল সিমজের মতো শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁকে গান লেখার নতুন ধারণা দিয়েছে।
বিশেষ করে ফ্রেড এগেইনের সঙ্গে কাজ করার সময় তিনি উপলব্ধি করেন, কীভাবে একটি গান মানুষের হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
সামাজিক মাধ্যমে ওবাংজায়ার ‘ডেভিল স্লেয়ার’ নামে পরিচিত। তবে তিনি মনে করেন, এই পরিচয় তাঁর ভেতরের দ্বিধা ও দ্বন্দ্বের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রতীক। একজন শিল্পী হিসেবে, তিনি সব সময় চেষ্টা করেন তাঁর ভাবনাগুলোকে এমনভাবে প্রকাশ করতে, যা সবার কাছে বোধগম্য হয়।
তাঁর মতে, “সৃষ্টিকর্তা যেমন আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী দিয়েছেন, তেমনি প্রতিটি মুহূর্তই আমাদের জন্য সুন্দর কিছু উপভোগ করার সুযোগ নিয়ে আসে।”
নভেম্বরে ওবাংজায়ারের কনসার্ট হওয়ার কথা রয়েছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান