যুদ্ধবিরতি নিয়ে পুতিনের কাছে কঠিন প্রস্তাব! কি বললেন জেলেনস্কি?

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে অস্ত্র বিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ার প্রতি তার আহ্বান, অন্তত ৩০ দিনের জন্য ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা বন্ধ করতে হবে।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে একতরফাভাবে ইস্টার সানডের আগে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও, জেলেনস্কি এটিকে ‘লোক দেখানো’ প্রচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেছেন।

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, রাশিয়ার সেনাবাহিনী যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরেও তা লঙ্ঘন করেছে। তিনি বলেন, রাশিয়া যদি তার প্রস্তাব মেনে নেয়, তবে এটি প্রমাণ হবে যে তারা সত্যিই যুদ্ধ বন্ধ করতে চায়।

অন্যথায়, এটি স্পষ্ট হবে যে তারা কেবল ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যেতে এবং যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে আগ্রহী।

জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরেও রোববার সকাল ১০টা থেকে তারা ব্যাপক গোলাবর্ষণ চালিয়েছে। তবে, রবিবার কোনো বিমান হামলার সতর্কতা শোনা যায়নি।

ইউক্রেনের সামরিক কমান্ডার-ইন-চিফ ওলেক্সান্ডার সিরস্কি’র একটি প্রতিবেদন উল্লেখ করে জেলেনস্কি এ কথা জানান।

ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপি’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনীয় সেনারা জানিয়েছেন, তারা যুদ্ধক্ষেত্রে কিছুটা শান্ত ভাব লক্ষ্য করেছেন।

একটি ড্রোন ইউনিটের কমান্ডার বলেছেন, জাপোরিঝিয়া এবং খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার তৎপরতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। যদিও বিচ্ছিন্নভাবে ছোট ছোট কিছু হামলা হয়েছে।

তবে, কিয়েভ-ভিত্তিক দ্য গার্ডিয়ানের সাংবাদিক লুক হার্ডিংকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অন্য ইউক্রেনীয় সেনা সদস্যরা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরেও রাশিয়ান হামলা অব্যাহত ছিল।

এদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি চুক্তি হতে পারে এবং এই সপ্তাহে এটি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও জানান, উভয় দেশই এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করতে পারবে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবে।

যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কে জেলেনস্কির এমন মন্তব্যের পর, সোমবার (রাত ১২টা) রাশিয়ার ঘোষিত ইস্টার যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার সতর্কতা জারি করে।

জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার কার্যক্রমের জবাব দেবে।

যুদ্ধ পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন বেসামরিক নাগরিকদের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত, তেমনি এর প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতেও।

এমন পরিস্থিতিতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *