শিরোনাম: ইন্দোনেশিয়ায় রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি: অস্ট্রেলিয়ার উদ্বেগের মধ্যে আন্তর্জাতিক রাজনীতি
আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইন্দোনেশিয়াকে কেন্দ্র করে অস্ট্রেলিয়া এবং রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। খবর অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ার একটি দ্বীপে রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে ক্যানবেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তবে মস্কো এটিকে ভিত্তিহীন প্রচারণা হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত কোনো দেশকে তাদের ভূখণ্ডে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের অনুমতি দেয়নি।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন জানা যায়, রাশিয়া ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বিয়াক দ্বীপে তাদের সামরিক বিমান ঘাঁটি তৈরির অনুমতি চেয়েছিল। এই দ্বীপটি অস্ট্রেলিয়ার ডারউইন শহর থেকে ১৩০০ কিলোমিটারেরও কম দূরে অবস্থিত। এরপরই অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিরোধী দল সরকারের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চায়, কিন্তু সরকারপক্ষ তাদের এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ রাশিয়ার এমন পদক্ষেপকে ‘propaganda’ বা অপপ্রচার হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, তিনি রাশিয়ার কোনো অপপ্রচারকে সমর্থন করতে চান না।
অন্যদিকে, ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই তোলচেনভ এক চিঠিতে লিখেছেন, অস্ট্রেলিয়ার এই বিষয়ে কোনো মাথা ঘামানোর দরকার নেই। তিনি আরও বলেন, ইন্দোনেশিয়া ও রাশিয়ার মধ্যেকার সম্পর্ক সম্পূর্ণ দ্বিপাক্ষিক এবং এতে অস্ট্রেলিয়ার কোনো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইন্দোনেশিয়া দীর্ঘদিন ধরে জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে এলেও সম্প্রতি রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক গভীর হচ্ছে। এমনকি, ইন্দোনেশিয়া রাশিয়ার সঙ্গে নৌমহড়া পর্যন্ত করেছে।
এই পরিস্থিতিতে, অস্ট্রেলিয়ার উদ্বেগকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যেখানে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও সামরিক স্বার্থ জড়িত।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইন্দোনেশিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর দেশটির পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। তিনি চীন ও রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন ব্রিকস জোটে যোগ দিয়েছেন এবং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে, ইন্দোনেশিয়ায় রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের সম্ভাবনা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিরোধী দল সরকারের কাছে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইছে।
তবে সরকার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে দেখা যায়নি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান