চীনের হুঁশিয়ারি: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার আগে সতর্ক হতে হবে অন্যান্য দেশকে।
বিশ্ব অর্থনীতির দুই বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্র, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন মোড় নিয়েছে। সম্প্রতি, চীন অন্যান্য দেশগুলোকে সতর্ক করে দিয়েছে, যাতে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন কোনো বাণিজ্য চুক্তি না করে, যা চীনের স্বার্থের পরিপন্থী।
বেইজিং স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, মার্কিন শুল্ক থেকে ছাড় পাওয়ার জন্য অন্য কোনো দেশের এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না, যা চীনের অর্থনীতির ক্ষতি করে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “তোষণ শান্তি আনতে পারে না, এবং আপস করলে সম্মান পাওয়া যায় না।
অন্যদের স্বার্থ ত্যাগ করে ক্ষণস্থায়ী সুবিধার জন্য তথাকথিত ছাড় আদায় করা বাঘের সঙ্গে দর কষাকষির মতো, যা উভয় পক্ষের জন্যই ধ্বংস ডেকে আনে এবং এতে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে, যার ফলে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
এর প্রতিক্রিয়ায়, চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেছে। বর্তমানে, চীনের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ধার্য করা হয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে, যেসব দেশ শুল্ক থেকে ছাড় পেতে চাইছে, তারা যেন চীনের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য কমিয়ে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, প্রায় ৭০টির বেশি দেশ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলো এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক কমানোর বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির তীব্র সমালোচনা করে একে ‘আধিপত্যবাদী রাজনীতি’ এবং ‘একতরফা জুলুম’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
তারা বলেছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যদি ‘জঙ্গলের আইনে’ পরিণত হয়, তাহলে সব দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
চীন অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিলে একতাবদ্ধভাবে কাজ করতে এবং একতরফা জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে প্রস্তুত।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব বাণিজ্যের এই পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার এবং কাঁচামাল সংগ্রহের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়তে পারে।
তাই, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের সতর্ক থাকতে হবে এবং বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের দিকে গভীর মনোযোগ দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা