ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে (এফএসইউ) বন্দুক হামলার ঘটনায় দুই জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার পর, সেখানকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তীব্র হয়েছে। দ্রুত পুলিশি তৎপরতা সত্ত্বেও, ক্লাসরুমের দরজাগুলোতে লক না থাকায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের অসহায় মনে করেছেন।
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার টল্লাহাসিতে অবস্থিত এফএসইউ ক্যাম্পাসে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র, ২০ বছর বয়সী ফিনিক্স ইকনর, নির্বিচারে গুলি চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে, যা বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করে। কিন্তু এরপরই সামনে আসে এক উদ্বেগের বিষয়।
আতঙ্কের সেই মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা যখন তাদের ক্লাসরুমগুলোতে আশ্রয় নেয়, তখন তারা জানতে পারে যে অনেক দরজায় লক নেই। এই বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর ভীতি তৈরি করে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী মেগান ব্যানিস্টার জানান, “আমরা যখন জানতে পারলাম দরজায় লক নেই, তখন সবাই যেন স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। আমাদের মনে হচ্ছিল, যে কেউ চাইলেই ক্লাসে ঢুকে পড়তে পারে।”
এই ঘটনার পর, শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্বেগের কথা জানাতে শুরু করে। তারা দ্রুত একটি পিটিশন তৈরি করে, যাতে ক্লাসরুমের দরজাগুলোতে কার্যকরী লক লাগানোর দাবি জানানো হয়। এই পিটিশনে ইতোমধ্যে প্রায় ৩০,০০০ স্বাক্ষর জমা পড়েছে। শিক্ষার্থীদের মতে, ক্লাসরুমের দরজায় লক থাকলে তারা আরও সুরক্ষিত অনুভব করতেন।
এফএসইউ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের উদ্বেগের প্রতি সম্মান জানিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করার কথা জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুখপাত্র জানান, “আমরা আমাদের ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা প্রোটোকলগুলো নিয়মিত পর্যালোচনা করছি এবং সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
তবে, নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধুমাত্র দরজায় লক লাগানোই যথেষ্ট নয়। ক্যানিং ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট জুলিওট কায়েমের মতে, “বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো সাধারণত উন্মুক্ত প্রকৃতির হওয়ায় এখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন। তাই, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন স্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।” এর মধ্যে বিল্ডিংগুলিতে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, শক্তিশালী যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং লকডাউন প্রশিক্ষণ অন্যতম।
ঘটনার পর দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোয় পুলিশের প্রশংসা করেছেন অনেকে। প্রাক্তন পুলিশ প্রধান চার্লস রামসে বলেন, “পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, যা প্রশংসার যোগ্য।”
বর্তমানে, এফএসইউ কর্তৃপক্ষ পুরো ঘটনার তদন্ত করছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন