বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করার স্বপ্ন দেখেন অনেকেই, কিন্তু সময় এবং অর্থের অভাবে তা অনেকের কাছেই অধরা থেকে যায়। তবে, সম্প্রতি একজন তরুণ আমেরিকান, কেভিন ড্রোনিয়াক, তাঁর ব্যতিক্রমী ভ্রমণ পরিকল্পনার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।
তিনি প্রমাণ করেছেন যে, স্বল্প সময়ে এবং সীমিত বাজেটে অনেক দেশ ঘুরে আসা সম্ভব।
২৭ বছর বয়সী কেভিন, পেশায় একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর। প্যারিস থেকে শুরু করে মিশর পর্যন্ত, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করে তিনি পরিচিতি লাভ করেছেন।
তাঁর এই অভিনব ভ্রমণের মূল মন্ত্র হলো – সময় এবং অর্থের সঠিক ব্যবহার। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর ভ্রমণের গোপন রহস্য ফাঁস করেছেন, যা ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কেভিন জানান, স্বল্প বাজেটে ভ্রমণের সবচেয়ে বড় কৌশল হলো – ভ্রমণের সময় হোটেলে থাকার খরচ বাঁচানো। তিনি বলেন, “আমি সাধারণত হোটেলে উঠি না।
এতে আমার অনেক টাকা সাশ্রয় হয়, যা আমি ভ্রমণের অন্যান্য খাতে ব্যবহার করি।” উদাহরণস্বরূপ, তিনি একবার মাত্র ৫০ ডলারে সিনসিনাটি শহরে গিয়েছিলেন, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫,৫০০ টাকার মতো।
যদিও সেখানে তাঁর কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল না, সস্তায় বিমানের টিকিট পাওয়ার কারণে তিনি সেখানে যান এবং শহরটি ঘুরে দেখেন।
তবে, কেভিনের মতে, স্বল্প সময়ের ভ্রমণে একটি নির্দিষ্ট গন্তব্য নির্বাচন করা জরুরি। এতে ভ্রমণের পরিকল্পনা সহজ হয় এবং সময় নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
যেমন, একবার তিনি পুয়ের্তো রিকোতে গিয়ে সমুদ্র সৈকতে কিছু সময় কাটিয়েছিলেন।
কেভিনের ভ্রমণের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো – তিনি অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত থাকেন। আবহাওয়া খারাপ থাকলেও তিনি হতাশ হন না, বরং সেই পরিস্থিতিকে উপভোগ করেন।
মিশরে তাঁর একটি ২৪ ঘণ্টার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রয়েছে, যেখানে তিনি কায়রোতে পৌঁছে পিরামিডও পরিদর্শন করেন।
এই ভ্রমণের জন্য তাঁর ৬৫০ ডলার খরচ হয়েছিল, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৫,০০০ টাকার সমান।
শুধু ভ্রমণ নয়, কেভিন তাঁর পরিবারের প্রতিও সমানভাবে দায়িত্বশীল।
তিনি তাঁর ৯৫ বছর বয়সী ঠাকুরমার দেখাশোনা করেন এবং তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টও তিনিই পরিচালনা করেন।
ঠাকুরমার দেখাশোনার পাশাপাশি বিশ্ব ভ্রমণের ইচ্ছাপূরণের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন তিনিই।
কেভিনের এই দ্বৈত জীবনযাত্রা অনেকের কাছেই অনুকরণীয়।
কেভিনের মতে, ভ্রমণের আসল আনন্দ বিলাসবহুল জীবনযাপনে নয়, বরং নতুন কিছু আবিষ্কার করার মধ্যে নিহিত।
তাই, যারা স্বল্প সময়ে এবং সীমিত অর্থে বিশ্ব ভ্রমণে যেতে চান, তাঁদের জন্য কেভিনের এই ভ্রমণ-পদ্ধতি একটি চমৎকার উদাহরণ হতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল