ভ্যাটিকানের অভ্যন্তরে পোপ ফ্রান্সিসের জীবন: প্রার্থনা, সেবা এবং শিল্পের প্রতি ভালোবাসা।
ভ্যাটিকান সিটিতে বসবাসকারী পোপ ফ্রান্সিসের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা অনেকের কাছেই কৌতূহলের বিষয়। একজন বিশ্বনেতা হিসেবে তিনি কীভাবে দিন কাটান, তা অনেকেরই আগ্রহের বিষয়।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের এক প্রতিবেদনে পোপ ফ্রান্সিসের জীবনযাত্রার একটি অন্তরঙ্গ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
ভোর হওয়ার আগেই পোপ ফ্রান্সিস ঘুম থেকে ওঠেন। এরপর তিনি ভ্যাটিকানের গেস্ট হাউস, কাসা সান্তা মার্তায় তাঁর সাধারণ কুঠুরিতে প্রার্থনা ও ধ্যান করেন।
দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি সকালের প্রার্থনাসভায় যোগ দেন এবং সেখানে ভাষণ দেন। এরপর শুরু হয় তাঁর দিনের অন্যান্য কার্যক্রম।
দিনের বেলায় পোপ ফ্রান্সিস ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সময়সূচি তৈরি করতে পছন্দ করেন। তিনি তাঁর সহকর্মী ও বন্ধুদের ফোন করেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে অংশ নেন এবং অন্যান্য অ্যাপয়েন্টমেন্টে ব্যস্ত থাকেন।
দুপুরের খাবারের পর তিনি বিশ্রাম নেন।
পোপ প্রায়ই কারাকক্ষ ও কিশোর বন্দীশালাগুলোতে যান। তিনি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়াও, প্রতি সপ্তাহে সুইস গার্ডের একজন সদস্য তাঁকে খেলার খবরাখবর দেন। উল্লেখ্য, পোপ ১৯৯০ সাল থেকে টেলিভিশন দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন।
তবে শিল্পকলার প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ রয়েছে। অপেরা, ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক এবং বারোক আর্ট-এর প্রতি তিনি বিশেষভাবে আকৃষ্ট।
ইতালীয় চলচ্চিত্র পরিচালক ফেদেরিকো ফেলিনি-র ‘লা স্তরাদা’ তাঁর প্রিয় সিনেমা।
মাসের মধ্যে কয়েকবার পোপ সেন্ট পিটার্স স্কয়ার অথবা ব্যাসিলিকায় বিশেষ প্রার্থনাসভার আয়োজন করেন। অনেক সময় একই দিনে দুটি স্থানেই তাঁকে দেখা যায়।
এই সময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ পোপের সান্নিধ্য লাভের জন্য সেখানে উপস্থিত হন।
পোপকে এক ঝলক দেখার জন্য অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
সন্ধ্যায় তিনি কাসা সান্তা মার্তার অন্য বাসিন্দাদের সঙ্গে রাতের খাবার খান। এরপর নিজের সাধারণ কক্ষে ফিরে যান।
দিনের শুরু যেমন শান্তভাবে হয়, দিনের শেষটাও তিনি সেভাবেই করেন। রাতে ঘুমানোর আগে তিনি বই পড়েন।
পোপ ফ্রান্সিসের জীবনযাত্রা কর্মময় এবং সাধারণ মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তিনি প্রতিদিনের রুটিনে প্রার্থনা, সেবা এবং শিল্পের প্রতি ভালোবাসার এক সুন্দর সমন্বয় ঘটান, যা বিশ্বজুড়ে মানুষের কাছে অনুকরণীয়।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।