বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া, প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস।
রোম, (এপি) – বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু, পোপ ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। সোমবার (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী) তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বজুড়ে শোকের ঢেউ লাগে।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সবাই তাঁদের শোক প্রকাশ করেছেন। পোপ ফ্রান্সিসকে স্মরণ করা হচ্ছে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের প্রতি তাঁর গভীর মনোযোগ, শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবিরাম চেষ্টা এবং পরিবেশ রক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে অবদান রাখার জন্য।
পোপ ফ্রান্সিস ২০১৩ সাল থেকে ভ্যাটিকানের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ছিলেন আর্জেন্টিনার নাগরিক এবং এই পদে আসীন হওয়া প্রথম লাতিন আমেরিকান। তিনি সবসময় চার্চকে আরও মানবিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক করার চেষ্টা করেছেন।
তাঁর সময়ে, ক্যাথলিক চার্চে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের প্রতি কিছুটা সহানুভূতির সুর শোনা গেছে, যা আগে দেখা যায়নি। তবে, কিছু ক্ষেত্রে তাঁর নীতি নিয়ে বিতর্কও হয়েছে।
বিশেষ করে, নারীদের যাজক পদে নিয়োগের বিষয়ে তাঁর অনড় অবস্থান অনেককে হতাশ করেছে।
পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেছেন, “আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।
ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস, যিনি সম্প্রতি পোপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন, তিনি পোপের পরিবেশ রক্ষার কাজের প্রশংসা করেছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “পোপ ফ্রান্সিস চেয়েছিলেন চার্চ দরিদ্র ও নিপীড়িত মানুষের কাছে আনন্দ ও আশা নিয়ে যাক।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিয়র্জিয়া মেলোনি তাঁর শোকবার্তায় বলেছেন, “আমরা একজন মহান মানুষ ও ভালো একজন গুরুর প্রতি বিদায় জানাচ্ছি।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস শোক প্রকাশ করে বলেছেন, পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন ন্যায়বিচারের প্রতি নিবেদিত একজন মানুষ। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁকে “মানবতাবাদী ও ন্যায়বিচারের একনিষ্ঠ রক্ষক” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পোপ ফ্রান্সিসের জীবন ছিল এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। তিনি শুধু ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের কাছেই নন, বরং সারা বিশ্বের মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা ছিলেন।
তাঁর প্রয়াণে বিশ্ব হারিয়েছে একজন মহান ধর্মগুরুকে, যিনি শান্তি, ন্যায়বিচার এবং মানবতার জন্য আজীবন কাজ করে গেছেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস