মার্ক কার্নের জয়: ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যের ফল?

কানাডার রাজনীতিতে ট্রাম্পের কিছু নীতি কানাডার আসন্ন নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে।

ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ এবং কানাডাকে আমেরিকার ৫১তম রাজ্যে পরিণত করার হুমকি দেশটির নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। এর ফলস্বরূপ, নির্বাচনে কানাডার লিবারেল পার্টির নেতা মার্ক কার্নি জনসমর্থন লাভ করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই আগ্রাসী মনোভাব অপ্রত্যাশিতভাবে কার্নিকে নির্বাচনে সুবিধা এনে দিতে পারে।

কানাডায় সম্প্রতি জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর নতুন করে রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়েছে।

মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে মার্ক কার্নি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি দীর্ঘদিন ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে কানাডায় জাতীয়তাবাদী ভাবধারা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা কার্নিকে নির্বাচনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড্যানিয়েল বেলান্ড মনে করেন, “রাজনীতিতে সময়জ্ঞান খুব গুরুত্বপূর্ণ, এবং কার্নি সঠিক সময়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেছেন।”

জানুয়ারীর মাঝামাঝি সময়ে করা একটি জনমত জরিপে দেখা যায়, লিবারেল পার্টি কনজারভেটিভ পার্টির থেকে বেশ খানিকটা পিছিয়ে ছিল। কিন্তু এপ্রিল মাসের শেষের দিকে করা সর্বশেষ জরিপে লিবারেল পার্টি আট শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে যায়।

মার্ক কার্নি একজন অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ হিসেবে সুপরিচিত। তিনি কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০০৮ সালের আর্থিক সংকট মোকাবেলায় তার দ্রুত পদক্ষেপের জন্য তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি সুদহার কমানো এবং ঋণ প্রদানের মাধ্যমে কানাডার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

মার্ক কার্নি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন অতীতের মতো নেই।

তিনি এর জন্য সরাসরি ট্রাম্পকে দায়ী করেছেন। যদি কার্নি নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি পুনর্বিবেচনা করার কথা জানিয়েছেন। কারণ, ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপের ফলে উভয় দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

কার্নি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে নতুনভাবে সাজাতে চাইছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের নীতির কারণে কানাডার ভোটারদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ বেড়েছে, যা কার্নিকে সমর্থন যোগাচ্ছে।

অনেকেই কার্নিকে একজন স্থিতিশীল এবং অভিজ্ঞ নেতা হিসেবে দেখছেন। নির্বাচনের ফলাফলের ওপর কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কেমন হবে, তা অনেকাংশে নির্ভর করবে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *