**অলিম্পিক জয়ী ট্রায়াথলন চ্যাম্পিয়ন অ্যালেক্স ইয়ি: লন্ডন ম্যারাথনে নতুন চ্যালেঞ্জ**
বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম পরিচিত মুখ, অলিম্পিক ট্রায়াথলন চ্যাম্পিয়ন অ্যালেক্স ইয়ি, এবার নাম লেখাতে চলেছেন লন্ডনের বিখ্যাত ম্যারাথনে।
প্যারিস অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয়ী এই ব্রিটিশ ক্রীড়াবিদ আসন্ন লন্ডন ম্যারাথনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন, যা তার জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।
দৌড়বিদ হিসেবে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি কতটা প্রস্তুত, তা নিয়ে ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আগ্রহ।
**নতুন পথে ইয়ি**
ট্রায়াথলনে সাফল্যের পর ম্যারাথনে নাম লেখানোটা ইয়ির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
সাধারণত, ট্রায়াথলনে ১.৫ কিলোমিটার সাঁতার, ৪০ কিলোমিটার সাইকেল চালনা এবং ১০ কিলোমিটার দৌড় শেষ করতে হয়।
তবে ম্যারাথনের চ্যালেঞ্জটা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
৪২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে বেশ কঠিন।
ইয়ি নিজেও এটা ভালো করেই জানেন।
তিনি বলেন, “অভিজ্ঞতাটা কেমন হবে, তা জানার জন্য আমি মুখিয়ে আছি।
একজন এলিট অ্যাথলেট হিসেবে আমরা তো সবসময়ই কষ্টের সঙ্গে পরিচিত।
আমি এর আগেও কঠিন পরিস্থিতি পার করেছি এবং সম্ভবত এই ভিন্ন ধরনের কষ্ট উপভোগ করার জন্য প্রস্তুত।”
**মানসিক দৃঢ়তা ও প্রস্তুতির গুরুত্ব**
একজন ম্যারাথন দৌড়বিদের জন্য শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি মানসিক দৃঢ়তাও খুব জরুরি।
ইয়ি মনে করেন, প্রতিযোগিতার দিন কঠিন পরিস্থিতিগুলো মোকাবিলা করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, “আমি সবসময় চেষ্টা করি প্রশিক্ষণের সময় সম্ভাব্য সব ধরনের মানসিক এবং শারীরিক অবস্থার সঙ্গে পরিচিত হতে।
যখন আমি কোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকি, তখন আমি মানসিকভাবে শান্ত থাকি এবং শরীরকে সেরাটা দিতে পারি।”
লন্ডন ম্যারাথনের আগে ইয়ি সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা নিতে গিয়েছিলেন।
দৌড়ের সময় দর্শকদের কাছ থেকে পাওয়া উৎসাহ নিয়ে তিনি বলেন, “আমি সবসময় মনে করি, দর্শক আমাদের অতিরিক্ত শক্তি যোগায়।
আশা করি, ২০ মাইলের পর যখন আসল দৌড় শুরু হবে, তখন আমি এই শক্তি কাজে লাগাতে পারব।”
**অনুপ্রেরণা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা**
লন্ডন ম্যারাথনে ইয়ি বিশ্ববিখ্যাত দৌড়বিদ এলিয়ুদ কিপচোগের সঙ্গে একই সারিতে দৌড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন।
কিপচোগকে তিনি গভীরভাবে শ্রদ্ধা করেন এবং তার মানসিকতার প্রশংসা করেন।
ইয়ি বলেন, “কিপচোগের মানসিকতার কারণেই তিনি এত সফল।
অনেকেই শারীরিক সক্ষমতার ওপর জোর দেন, কিন্তু মনের শক্তিকে অবহেলা করেন।
আমি ট্রায়াথলনেও একই মানসিকতা বজায় রাখতে চেষ্টা করি।”
এই দৌড়ের মাধ্যমে ইয়ি শুধু নিজের সেরাটা দিতে চান তাই নয়, বরং ভবিষ্যতে ট্রায়াথলন এবং সম্ভবত অন্য কোনো ম্যারাথনে অংশগ্রহণের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে চান।
তিনি বিশ্বাস করেন, এই অভিজ্ঞতা তাকে আরও পরিণত করবে।
নিজের সাফল্যের পেছনে পরিবারের সদস্যদের অবদানও স্বীকার করেন ইয়ি।
তার দাদা ৯৩ বছর বয়সেও পার্করানে অংশ নেন, যা ইয়ির জন্য বিশাল অনুপ্রেরণা।
ইয়ি বলেন, “আমার দাদা এখনো দৌড়ান, এটা সত্যিই অসাধারণ।
জীবনকে উপভোগ করার তার এই আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করে।”
লন্ডন ম্যারাথনে ইয়ির সময় কেমন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার প্রধান লক্ষ্য হলো দৌড়টি উপভোগ করা এবং হাসিমুখে ফিনিশিং লাইন অতিক্রম করা।
আমি ২ ঘণ্টা ১০ মিনিটের কম সময়ে দৌড় শেষ করতে চাই।
যদি দিনটা ভালো যায়, তাহলে দেখা যাক আরও কি হয়।”
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান