সিমোন বাইলস, বিশ্বজুড়ে পরিচিত একজন আমেরিকান জিমন্যাস্ট। অলিম্পিকে একাধিক স্বর্ণপদক জয়ী এই তারকার সাফল্যের পেছনে লুকিয়ে ছিল এক কঠিন লড়াই।
সম্প্রতি জানা গেছে, ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকের আগেও তিনি ‘টুইস্টিজ’ নামক এক সমস্যার শিকার হয়েছিলেন। তাঁর সাবেক কোচ, অ্যামি বোরম্যান, এই তথ্য জানিয়েছেন।
বোরম্যানের নতুন বই, ‘দ্য ব্যালেন্স: মাই ইয়ার্স কোচিং সিমোন বাইলস’-এ এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ‘টুইস্টিজ’ হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে জিমন্যাস্টরা শূন্যে থাকাকালীন তাদের শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
খেলাধুলার জগতে সামান্য ভুলের কারণে গুরুতর আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, আর এই সমস্যা তাঁদের জন্য আরও বেশি উদ্বেগের কারণ হয়।
২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে বাইলস চারটি স্বর্ণপদক জিতে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেন। কিন্তু বোরম্যানের মতে, এর আগে ২০১৫ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পর থেকেই তিনি এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন।
ওই সময় বাইলস কার্যত কোনো কিছুই সঠিকভাবে করতে পারছিলেন না। বোরম্যান জানান, বাইলস এতটাই ভীত ছিলেন যে তিনি তাঁর রুটিনে মোচড় দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন, কারণ তিনি শূন্যে দিক হারিয়ে ফেলতেন।
বোরম্যান চাননি বাইলসকে দ্রুত প্রতিযোগিতায় ফেরাতে, তাই তিনি ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। বাইলসের পরিবার এবং থেরাপিস্টের সঙ্গে কথা বলার পর তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং ২০১৬ সালের অলিম্পিক ট্রায়ালের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
বোরম্যান তাঁর বইয়ে লিখেছেন, “সৌভাগ্যবশত, কোনো আঘাত ছাড়াই টুইস্টিজ-এর সমস্যা কাটিয়ে ওঠা গিয়েছিল। আমরা প্রমাণ করতে পেরেছিলাম যে একজন শীর্ষস্থানীয় জিমন্যাস্ট কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রশিক্ষণ বন্ধ রেখেও তার দক্ষতা ধরে রাখতে পারে।”
২০২১ সালের টোকিও অলিম্পিকে বাইলস মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে কয়েকটি ইভেন্ট থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। তবে সম্প্রতি প্যারিস অলিম্পিকে তিনি তিনটি স্বর্ণপদক জিতেছেন।
২৮ বছর বয়সী বাইলসের ঝুলিতে রয়েছে ১১টি অলিম্পিক পদক এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে জেতা ৩০টি পদক। বর্তমানে তিনিই জিমন্যাস্টিক ইতিহাসের সবচেয়ে সফল তারকা।
২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা এখনো উড়িয়ে দেননি তিনি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান