গ্যারি লিনেকার: বিবিসি-র ‘ম্যাচ অফ দ্য ডে’ ছাড়ার ইঙ্গিত, নতুন দিগন্তে যাত্রা
বিখ্যাত ফুটবলার এবং ধারাভাষ্যকার গ্যারি লিনেকার দীর্ঘদিন ধরে বিবিসি-র জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘ম্যাচ অফ দ্য ডে’-র সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
এই অনুষ্ঠানে তার বিদায় নেওয়ার ঘোষণার পর, লিনেকার নিজেই জানিয়েছেন যে, সম্ভবত বিবিসি কর্তৃপক্ষও চাইছিল তিনি অনুষ্ঠানটি ছাড়ুক।
প্রায় ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি থেকে লিনেকারের এই বিদায় নেওয়ার কারণ হিসেবে অনেকে মনে করছেন, নতুন করে অনুষ্ঠানটির স্বত্বাধিকার পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে।
২০২৫-২৬ মৌসুম থেকে গ্যাব্রি লোগান, কেলি কেইটস এবং মার্ক চ্যাপম্যান এই অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করবেন।
লিনেকার অবশ্য ২০২৫-২৬ মৌসুমে এফএ কাপ এবং ২০২৬ সালের বিশ্বকাপেও বিবিসি-র হয়ে ধারাভাষ্য দেবেন।
বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লিনেকার বলেন, “আমার মনে হয়, সম্ভবত তারা চাইছিল আমি আর ‘ম্যাচ অফ দ্য ডে’ তে কাজ না করি… অনেকদিন ধরেই তো কাজ করছি, তাই হয়তো এটা তাদের পছন্দ ছিল নতুন কাউকে আনা।”
অনুষ্ঠানটি ছাড়ার প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, এই মুহূর্তে তিনি অন্য কিছু কাজ করতে চান।
বিবিসি-র হয়ে তিনি এফএ কাপ এবং বিশ্বকাপের মতো বড় ইভেন্টগুলোতে কাজ করতে মুখিয়ে আছেন।
লিনেকার মনে করেন, এই পরিবর্তনের ফলে দর্শকদের জন্য অনুষ্ঠানটি আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, লিনেকার বিবিসির সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া কর্মীদের মধ্যে একজন ছিলেন।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে তিনি প্রায় ১.৩৫ মিলিয়ন পাউন্ড আয় করেছেন বলে জানা যায়।
বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ হিসাব করলে তা বেশ বড় একটা অঙ্ক।
তবে, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সব সময় স্থিতিশীল থাকে না।
ফুটবলের ধারাভাষ্য দেওয়ার পাশাপাশি লিনেকার তার নিজস্ব ‘ম্যাচ অফ দ্য ডে টপ ১০’ এবং ‘দ্য রেস্ট ইজ ফুটবল’ নামে দুটি জনপ্রিয় পডকাস্টও চালিয়ে যাবেন, যেখানে বিবিসি-র অন্যান্য বিশেষজ্ঞরাও অংশ নেন।
২০২৩ সালে, যুক্তরাজ্যের সরকার এর আশ্রয়নীতি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি মন্তব্য করার কারণে লিনেকারকে সাময়িকভাবে ‘ম্যাচ অফ দ্য ডে’ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
পরবর্তীতে অবশ্য তিনি আবার ফিরে আসেন।
সেই ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি জানান, তিনি তার মন্তব্যের জন্য অনুতপ্ত নন, কারণ তিনি সঠিক তথ্যই তুলে ধরেছিলেন।
তবে, বিতর্ক এড়াতে ভবিষ্যতে এমনটা আর নাও করতে পারেন।
গাজা অঞ্চলের শিশুদের নিয়ে নির্মিত একটি বিবিসির তথ্যচিত্র পুনরায় সম্প্রচারের পক্ষেও তিনি সমর্থন জানিয়েছেন।
বিবিসির পক্ষ থেকে অবশ্য এই বিষয়ে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে।
গ্যারি লিনেকারের এই বিদায় নিঃসন্দেহে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
তার দীর্ঘদিনের কর্মজীবন এবং ধারাভাষ্যের মাধ্যমে তিনি দর্শকদের মনে বিশেষ স্থান করে নিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান