যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির কারণে পোশাকের দাম বাড়তে পারে, যা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য উদ্বেগের কারণ। সম্প্রতি, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর মূল কারণ হলো চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি। এই শুল্ক বৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর, বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন থেকে আসা পোশাকের চাহিদা অনেক বেশি। ট্রাম্প সরকারের এই শুল্ক নীতির কারণে টি-শার্ট, মোজা এবং জুতার মতো মৌলিক পোশাকের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্কের কারণে আগামী এক বছরের মধ্যে পোশাকের দাম প্রায় ৬৫ শতাংশ এবং জুতার দাম ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এমনকি দীর্ঘমেয়াদেও পোশাকের দাম ২৫ শতাংশ এবং জুতার দাম ২৯ শতাংশ পর্যন্ত বেশি থাকতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একটি বড় বাজার।
যদি মার্কিন বাজারে পোশাকের দাম বাড়ে, তবে তা বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর প্রভাব ফেলবে। এর ফলে, বাংলাদেশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতি মূলত স্বল্প মূল্যের পোশাকের ওপর বেশি প্রভাব ফেলবে। বিলাসবহুল পণ্যের দাম সে তুলনায় কম বাড়বে, কারণ এই ধরনের পণ্য সাধারণত ইউরোপ থেকে আসে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের গার্মেন্টস মালিকদের নতুন কৌশল অবলম্বন করতে হতে পারে। তাদের উৎপাদন খরচ কমানোর পাশাপাশি, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের ডিজাইন ও গুণগত মান উন্নত করতে হবে।
এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রের একটি সিদ্ধান্ত, “ডি মিনিমিস” নামের শুল্ক ছাড় বাতিল করার কারণেও স্বল্প আয়ের মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই ছাড়ের ফলে, ৮০০ ডলারের কম মূল্যের পণ্য শুল্কমুক্তভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারত।
কিন্তু এটি বাতিল হওয়ায়, অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে পোশাক কেনা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই বাণিজ্য নীতি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ। এর ফলে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সরকার এবং গার্মেন্টস মালিকদের যৌথ উদ্যোগে একটি কার্যকর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, যাতে এই প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায় এবং দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা যায়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন