ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস, যিনি বিশ্বের ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের প্রধান ছিলেন, ৮৮ বছর বয়সে ইস্টার সানডে-র পরের দিন, সোমবার (২১ এপ্রিল, ২০২৫) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ভ্যাটিকান সিটি থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন।
পোপের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন কার্ডিনাল কেভিন ফারেল।
পোপ ফ্রান্সিসের জীবনাবসান হয় মূলত স্ট্রোকের কারণে, যা পরে কোমা ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে। এর আগে তিনি শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসেও ভুগছিলেন।
আর্জেন্টিনার এই পোপ, যিনি লাতিন আমেরিকা থেকে আসা প্রথম ধর্মগুরু ছিলেন, ১২ বছরের বেশি সময় ধরে ক্যাথলিক চার্চের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার প্রয়াণের পর শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের মধ্যে।
গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি ফুসফুসের সংক্রমণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন। হাসপাতালে থাকাকালীন তার শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে চিকিৎসকরা একসময় তার চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু পরে তারা চেষ্টা চালিয়ে যান এবং পোপ ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন।
হাসপাতাল থেকে ফেরার পর তিনি বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ৯ এপ্রিল তিনি যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস এবং কুইন ক্যামিলার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ১৭ এপ্রিল পবিত্র বৃহস্পতিবার তিনি রোমের একটি কারাগারে কারাবন্দীদের সঙ্গে দেখা করেন।
ইস্টার সানডে-র আগের দিন তিনি ঐতিহ্যপূর্ণ ‘উরবি এট অরবি’ আশীর্বাদ দেন এবং সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে সমবেত তীর্থযাত্রীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। এসময় তিনি গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান।
পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও আন্তর্জাতিক নেতারা। তারা তার মানবিক গুণাবলী এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তার অবদানের কথা স্মরণ করেছেন। খুব শীঘ্রই নতুন পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, এবং এরপরই জানা যাবে কে হচ্ছেন পরবর্তী ধর্মগুরু।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা