আইফোনের ‘শত্রু’র হাতে ট্রাম্পের শুল্কের বড় সুযোগ!

**যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ: স্মার্টফোন বাজারে প্রভাব, বাংলাদেশের জন্য কী বার্তা?**

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের আঁচ এবার সরাসরি এসে লাগতে পারে স্মার্টফোন বাজারে। বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো, বিশেষ করে অ্যাপল এবং স্যামসাং, এই পরিস্থিতিতে কেমন প্রভাবের শিকার হবে, তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উৎপাদন কেন্দ্র ভিন্ন হওয়ায় এই দুই কোম্পানির ওপর শুল্কের প্রভাব ভিন্ন হতে পারে, যা বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলবে।

চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ দীর্ঘদিনের। এর ফলস্বরূপ, চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই শুল্কের কারণে স্মার্টফোনসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

অ্যাপলের প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র চীনে অবস্থিত হওয়ায় তারা এই শুল্কের সরাসরি শিকার হতে পারে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, অ্যাপলের আইফোন প্রস্তুত করতে চীননির্ভরতা বেশি থাকায়, শুল্ক বাড়লে আইফোনের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, একটি আইফোন 16 প্রো ম্যাক্সের দাম প্রায় ৮০০ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, স্যামসাং চীনের পরিবর্তে ভিয়েতনাম, ভারত, এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় তাদের স্মার্টফোন তৈরি করে। এর ফলে, চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক তাদের সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত নাও করতে পারে।

যদিও, উভয় কোম্পানিকেই সেমিকন্ডাক্টর বা চিপসের মতো যন্ত্রাংশের ওপর শুল্কের প্রভাব মোকাবিলা করতে হবে। কারণ, স্মার্টফোনের অত্যাবশ্যকীয় এই উপাদানগুলোর সরবরাহও বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে স্যামসাং কিছুটা সুবিধা পেতে পারে। তবে, এর মানে এই নয় যে তারা সরাসরি বিক্রি বাড়াতে পারবে।

কারণ, অ্যাপলের গ্রাহকরা সাধারণত ব্র্যান্ডের প্রতি বেশি অনুগত থাকেন। তাই, দাম বাড়লেও তারা স্যামসাংয়ের দিকে ঝুঁকবে কিনা, তা নিশ্চিত নয়।

তবে, এই বাণিজ্য যুদ্ধের একটি বৃহত্তর প্রভাব হলো বিশ্ব অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি হওয়া। এর ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমতে পারে, যা স্মার্টফোনসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমিয়ে দিতে পারে।

উন্নত দেশগুলোতে মানুষ পুরনো ফোন বেশিদিন ধরে ব্যবহার করতে পারে, আবার উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও স্মার্টফোন কেনার আগ্রহ কমতে পারে।

বর্তমানে বাংলাদেশে স্মার্টফোনের বাজার বেশ বড়। এখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে অ্যাপল ও স্যামসাং উল্লেখযোগ্য।

বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে স্মার্টফোনের দাম বাড়লে, তা সরাসরি বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলবে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য স্মার্টফোন কেনা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে কোন কোম্পানি কতটুকু সুবিধা করতে পারবে, তা নির্ভর করবে তাদের উৎপাদন ব্যবস্থা, সরবরাহ ব্যবস্থা এবং বাজারের চাহিদার ওপর।

বাংলাদেশের বাজারে স্মার্টফোনের দাম কেমন হবে, তা জানতে আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *