ডালাস ম্যাভারিক্সের জেনারেল ম্যানেজার (সাধারণ ব্যবস্থাপক) নিকো হ্যারিসন স্বীকার করেছেন যে, লুকা ডনচিচকে লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্সে পাঠানোর আগে তিনি দলের সমর্থকদের মধ্যে এই তারকা খেলোয়াড়ের জনপ্রিয়তা ঠিকভাবে আন্দাজ করতে পারেননি। বাস্কেটবল বিশ্বে, বিশেষ করে ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন (এনবিএ)-এর ইতিহাসে, এটি ছিল একটি বড় ধাক্কা।
ফেব্রুয়ারিতে এই ট্রেড হওয়ার পর ডনচিচকে নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, তা সম্ভবত হ্যারিসন নিজেও আশা করেননি।
স্লোভেনিয়ার বাস্কেটবল তারকা ডনচিচ এক সময় ম্যাভারিক্সের প্রধান খেলোয়াড় ছিলেন এবং তার খেলার সেরা সময়েই এমনটা ঘটায় অনেকেই হতবাক হয়েছিলেন। ডনচিচকে হারানোর পর ডালাসের সমর্থকরা হ্যারিসনের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তাকে বরখাস্ত করার দাবি জানান।
যদিও হ্যারিসন এই সিদ্ধান্তের পক্ষে বরাবরই কথা বলেছেন, কিন্তু সম্প্রতি তিনি স্বীকার করেছেন যে ডনচিচকে নিয়ে সমর্থকদের ভালোবাসা সম্পর্কে তার ধারণা কম ছিল।
ম্যাভারিক্সের হয়ে খেলা শেষ হওয়ার পর এক সংবাদ সম্মেলনে হ্যারিসন বলেন, “আমি জানতাম লুকা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে সমর্থকদের মধ্যে তার প্রভাব ঠিক কতটা গভীর ছিল, তা বুঝতে পারিনি।”
ডনচিচকে লেকার্সে পাঠানোর বিনিময়ে ম্যাভারিক্স ১০ বারের ‘অল-স্টার’ খেলোয়াড় অ্যান্থনি ডেভিসকে দলে ভেড়ায়। তাদের লক্ষ্য ছিল ডেভিসকে কেন্দ্র করে একটি শক্তিশালী দল তৈরি করা।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, ট্রেডের পর থেকেই দলটি বেশ কিছু ইনজুরির শিকার হয়। ডেভিস মৌসুমের একটা বড় সময় খেলতে পারেননি, এবং কাইরি ইরভিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ও ‘এসিএল’ (অ্যান্টিরিয়র ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট) ছিঁড়ে যাওয়ায় মাঠের বাইরে ছিলেন।
এই ইনজুরির কারণে ডালাস দল ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ে। প্লে-ইন টুর্নামেন্টে কোনোমতে তারা দশম স্থান অর্জন করে এবং দ্বিতীয় ম্যাচেই তাদের বিদায় নিতে হয়।
এই পরিস্থিতিতে হ্যারিসনের উপর চাপ আরও বাড়ে। ম্যাভারিক্সের খেলা চলাকালীন সময়ে সমর্থকদের ‘ফায়ার নিকো’ স্লোগান দিতেও শোনা গেছে।
তবে হ্যারিসন এখনো মনে করেন, ডালাসের একটি ভালো দল তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, আমাদের একটি চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার মতো দল ছিল এবং আমরা ভালো খেলতেও পারতাম।
দুর্ভাগ্যবশত, তা হয়নি এবং এই কারণে বিতর্ক চলতেই থাকছে।”
ম্যাভারিক্সের সমর্থকদের জন্য বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে কারণ ডনচিচ লস অ্যাঞ্জেলেসে যাওয়ার পর লেকার্স বেশ ভালো খেলছে এবং প্লে-অফে জায়গা করে নিয়েছে। এমনকি তারা শিরোপার অন্যতম দাবিদার হিসেবেও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ডনচিচ যখন প্রথমবারের মতো আমেরিকান এয়ারলাইনস সেন্টারে (ম্যাভারিক্সের হোম গ্রাউন্ড) ফিরে আসেন, তখন তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। দর্শকেরা তার নামে জয়ধ্বনি দেয় এবং আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ডনচিচ নিজেও।
খেলোয়াড় জীবনের শুরুতে তিনি ডালাস ম্যাভারিক্সের হয়েই পরিচিতি লাভ করেন।
ডনচিচ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানান, ট্রেডের খবর শুনে তিনি তার ফোন ছুঁড়ে ভেঙে ফেলেছিলেন এবং “আমি মূলত দুঃখ পেয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল যেন আমার হৃদয় ভেঙে গেছে।”
তথ্য সূত্র: সিএনএন
