সংকট! ইথিওপিয়ায় ৬.৫ লাখ শিশুর খাদ্য সহায়তা বন্ধ করলো জাতিসংঘ

শিরোনাম: অর্থ সংকটে ইথিওপিয়ায় খাদ্য সহায়তা বন্ধ করতে বাধ্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি

জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (World Food Programme – WFP), অর্থ সংকটের কারণে ইথিওপিয়ার প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ অপুষ্টিতে ভোগা নারী ও শিশুর জন্য খাদ্য সহায়তা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। মঙ্গলবার সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, জরুরি ভিত্তিতে নতুন আর্থিক সহায়তা পাওয়া না গেলে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইথিওপিয়ার প্রায় ৩৬ লক্ষ মানুষ খাদ্য সহায়ত থেকে বঞ্চিত হতে পারে।

**সাহায্য বন্ধ হওয়ার কারণ: তহবিল সংকট**

ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, পর্যাপ্ত তহবিলের অভাবে তারা মে মাস থেকে সাড়ে ছয় লক্ষ অপুষ্টিতে আক্রান্ত নারী ও শিশুর চিকিৎসা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে। সংস্থাটি ২০২৩ সালে দুই মিলিয়ন মা ও শিশুকে জীবন রক্ষাকারী পুষ্টি সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২২ কোটি ২০ লক্ষ মার্কিন ডলারের তহবিল ঘাটতির কারণে সেই পরিকল্পনা পূরণ করা সম্ভব হবে না।

সংস্থাটি আরও সতর্ক করে বলেছে, অতিরিক্ত তহবিল পাওয়া না গেলে জুনে প্রায় ১০ লক্ষ শরণার্থীর খাদ্য ও নগদ সহায়তাও বন্ধ হয়ে যাবে।

**সংকট সৃষ্টির কারণসমূহ**

ইথিওপিয়ার ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষের মধ্যে ১ কোটির বেশি মানুষ খাদ্য সংকটের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর প্রধান কারণগুলো হলো – সংঘাত, অস্থিতিশীলতা, এবং খরা। দেশটির উত্তরাঞ্চলে ফেডারেল বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে দুই বছর ধরে চলা ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ (Tigray conflict) নভেম্বর ২০২২-এ শেষ হয়। এতে অন্তত ৬ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়াও, প্রতিবেশী দেশ ইরিত্রিয়ার সঙ্গেও ইথিওপিয়ার উত্তেজনা বাড়ছে। উভয় দেশের মধ্যে সমুদ্র পথে প্রবেশাধিকার নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে, যা আফ্রিকার শৃঙ্গে আবারও একটি সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করেছে। ইথিওপিয়ার আমহারা অঞ্চলে চলমান সহিংসতা মানবিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। মে মাস পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব ইথিওপিয়ায় স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

**বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট**

ডব্লিউএফপির মতো অনেক সাহায্য সংস্থা বর্তমানে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর তহবিল সংগ্রহে কিছুটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।

জাতিসংঘের এই সংস্থাটির খাদ্য সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ইথিওপিয়ার নারী, শিশু ও শরণার্থীদের জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়বে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত এই সংকট মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে, যাতে ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়া যায়।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *