রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: সরাসরি আলোচনায় বসতে রাজি পুতিন?
ক্রেমলিন জানিয়েছে যে তারা ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে প্রস্তুত, তবে ইস্টার বিরতি বাড়ানোর কিয়েভের প্রস্তাবে সমর্থন দিতে রাজি নয়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলতে চান, যদি কিয়েভ কিছু ‘বাধা’ দূর করে।
সোমবার রাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধ করতে অবিলম্বে আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন কমপক্ষে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত না করার প্রস্তাব বজায় রেখেছে। আমরা মস্কোর কাছ থেকে একটি সুস্পষ্ট প্রতিক্রিয়া আশা করছি। আমরা কীভাবে এটি অর্জন করা যায়, সে বিষয়ে যেকোনো আলোচনার জন্য প্রস্তুত।’
যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা নিয়ে সম্প্রতি পুতিন ও জেলেনস্কি দুজনেই ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন। সম্ভবত, ট্রাম্প প্রশাসনের ক্রমবর্ধমান চাপের কারণে এমনটা হচ্ছে। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে তারা আলোচনায় কোনো অগ্রগতি না হলে মধ্যস্থতা বন্ধ করতে পারে।
ফেব্রুয়ারি ২০২২-এ ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণের পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে সরাসরি কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি।
পুতিন সোমবার রাশিয়ার টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তব্যে বলেন, ‘যেকোনো শান্তি উদ্যোগের প্রতি রাশিয়ার ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে।’ তবে, তিনি যুদ্ধ বন্ধের জন্য কিছু চরম শর্ত থেকে সরে আসতে রাজি নন। এর মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনের সামরিকীকরণ এবং ২০১৪ সালে অবৈধভাবে দখল করা চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের ওপর রাশিয়ার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা।
এদিকে, বুধবার ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে লন্ডনে পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বৈঠকের পরেই প্যারিসে অনুষ্ঠিত আলোচনাগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হবে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে সংঘাত নিরসনের একটি প্রস্তাব পেশ করেন।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘শান্তি চুক্তির’ প্রস্তাব করছে, যা মূলত রাশিয়ার পক্ষেই বেশি সহায়ক হবে। প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে এক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ যুদ্ধক্ষেত্র বরাবর সংঘাত স্থগিত করা, ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং ন্যাটোর সঙ্গে ইউক্রেনের যোগদান ভেটো দেওয়ার মতো বিষয়।
লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে কিয়েভ এই প্রস্তাবের জবাব দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে, বিশেষ করে খাদ্য ও জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ। এই পরিস্থিতিতে, শান্তি আলোচনা দ্রুত শুরু হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান