যুদ্ধবিধ্বস্ত বিশ্বে স্পেনের সাহসী পদক্ষেপ: ন্যাটোর প্রতিশ্রুতি পূরণে প্রস্তুত!

স্পেনের প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের পরিমাণ বাড়াতে ১০.৫ বিলিয়ন ইউরোর একটি নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে ন্যাটো’র বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জিডিপি’র ২ শতাংশ অর্থ সামরিক খাতে ব্যয় করতে চায়।

মঙ্গলবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এই পরিকল্পনার ঘোষণা করেন।

**ইউক্রেন সংকট এবং নিরাপত্তা উদ্বেগ**

প্রধানমন্ত্রী সানচেজ বলেন, বর্তমান বিশ্বে ইউরোপের নিরাপত্তা আরো সুসংহত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং সাইবার হামলাসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি মোকাবিলায় ইউরোপকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, শত্রুরা এখন কেবল ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে না, বরং তারা সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটাতে, গ্যাস লাইন ও আন্ডারওয়াটার কেবল ধ্বংস করতে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার মতো কাজ করছে।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, এই পরিকল্পনা অনুমোদনের ফলে তারা দ্রুত ইউরোপের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে পারবে। তার মতে, অনিশ্চয়তায় ভরা বিশ্বে ইউরোপ আশা ও নিশ্চয়তার প্রতীক। তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার মাধ্যমে এই নিশ্চয়তাকে রক্ষা করতে হবে।

**ন্যাটোর চাপ ও অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া**

ন্যাটো’র সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে স্পেনকে দীর্ঘদিন ধরেই তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ন্যাটো সদস্যদের প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের পরিমাণ জিডিপি’র ৫ শতাংশে উন্নীত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এই পরিকল্পনার বিষয়ে স্পেনের বামপন্থী রাজনৈতিক দল ‘সুমার’-এর পক্ষ থেকে সমালোচনা করা হয়েছে। তারা এই পরিকল্পনাকে “অসামঞ্জস্যপূর্ণ” এবং “অতিরিক্ত” বলে মন্তব্য করেছেন।

তবে, প্রধানমন্ত্রী সানচেজ জানিয়েছেন, এই অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে নতুন করে কোনো কর আরোপ করা হবে না এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতেও কোনো কাটছাঁট করা হবে না।

**ন্যাটো’র ভূমিকা**

ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে দেশগুলোকে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, স্পেন, পর্তুগাল, বেলজিয়াম ও ইতালির মতো দেশগুলো এরই মধ্যে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, স্পেনের এই পদক্ষেপ ইউরোপীয় নিরাপত্তা কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে। বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তা সংকট মোকাবিলায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

একই সাথে, ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *