“হোয়াইট লোটাস”-এর হাত ধরে থাইল্যান্ড ভ্রমণে? সিনেমার লোকেশনগুলো নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, “হোয়াইট লোটাস” (The White Lotus) -এর মতো বিলাসবহুল ভ্রমণের আকর্ষণ আর কোনো টিভি সিরিজ তৈরি করতে পারেনি। এই সিরিজের তৃতীয় সিজন মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই এর শুটিং লোকেশন নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ তুঙ্গে।
চমৎকার সমুদ্র সৈকত, আকর্ষণীয় কাহিনীর মোড়, এবং সেই সঙ্গে ধনী পর্যটকদের বিচিত্র আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে এই সিরিজটি দর্শকদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
সিরিজটির প্রথম দুটি সিজন হাওয়াই এবং সিসিলিতে চিত্রায়িত হয়েছিল। এবার, এইচবিও’র এই জনপ্রিয় সিরিজটি দর্শকদের নিয়ে গেছে থাইল্যান্ডে, যা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য হিসেবে সুপরিচিত।
কোহ সামুই, ফুকেট এবং ব্যাংকক—এই তিনটি স্থানে দৃশ্যধারণ করা হয়েছে। ক্যারি কুন, মিশেল মোনাঘান, জেসন আইজ্যাকস, লেসলি বিব, ওয়ালটন গগিন্স, এবং পার্কি পোজির মতো তারকারা এই সিজনে অভিনয় করেছেন।
এছাড়াও, থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় শিল্পী লালিসা ‘লিসা’ মানোবালের উপস্থিতি দর্শকদের বাড়তি আকর্ষণ জুগিয়েছে।
আসুন, জেনে নেওয়া যাক এই সিরিজের শুটিং-এর জন্য ব্যবহৃত স্থানগুলো সম্পর্কে, যা আপনাকেও থাইল্যান্ড ভ্রমণে উৎসাহিত করতে পারে।
কোহ সামুই: বিলাসবহুলতার সাথে ঐতিহ্যের মেলবন্ধন
কোহ সামুই, থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ, তার সাদা বালুকাময় সৈকত এবং বিলাসবহুল হোটেলগুলোর জন্য বিখ্যাত।
সিরিজের অধিকাংশ দৃশ্য এখানে ধারণ করা হয়েছে। এখানকার ফোর সিজনস রিসোর্ট কোহ সামুই-এর মত জনপ্রিয় হোটেলগুলো ‘হোয়াইট লোটাস’-এর শুটিংয়ের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।
এখানকার পুল ভিলা, সুইমিং পুল, এবং অন্যান্য স্থানে সিরিজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়াও, এখানকার ঐতিহাসিক ওয়াট ফু খাও থং-এর বৌদ্ধ মন্দিরটিও এই সিরিজে দেখা যায়, যা দর্শকদের মন জয় করেছে।
কোহ সামুইয়ের কাছাকাছি অবস্থিত কোহ ফাঙ্গানের বিখ্যাত ফুল মুন পার্টিতেও সিরিজের কিছু দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে।
ফুকেটের লুকানো রত্ন
‘হোয়াইট লোটাস’-এর কিছু দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে থাইল্যান্ডের বৃহত্তম দ্বীপ ফুকেট-এ।
এখানকার আনান্তারা মাই খাও ফুকেট রিসোর্ট-এ সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে। এই রিসোর্টের প্রাইভেট পুল ভিলাও দর্শকদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে।
ব্যাংককের ঝলমলে জীবন
সিরিজের দ্বিতীয় অংশে, অভিনেতা রিক ব্যাংকক ভ্রমণে যান এবং সেখানকার নাইট ক্লাবগুলোতে তার কিছু দৃশ্য ধারণ করা হয়।
ব্যাংককের ঐতিহাসিক ম্যান্ডারিন ওরিয়েন্টাল হোটেলের বাম্বু বারে এই দৃশ্যগুলোর শুটিং হয়েছে।
পর্যটনে ‘হোয়াইট লোটাস’-এর প্রভাব
২০২৪ সালের শুরুতে যখন জানা যায় যে, এই সিরিজের তৃতীয় সিজন থাইল্যান্ডে চিত্রায়িত হবে, তখন থেকেই পর্যটনখাতে এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
থাইল্যান্ডের পর্যটন কর্তৃপক্ষের গভর্নর থাপানি কিয়াটফাইবুন এক বিবৃতিতে জানান, “আমরা অত্যন্ত সম্মানিত যে, ‘হোয়াইট লোটাস’-এর মতো জনপ্রিয় সিরিজের শুটিং-এর জন্য থাইল্যান্ডকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
পর্যটন কর্তৃপক্ষের মতে, ২০২৩ সালে প্রায় সাড়ে তিন কোটি আন্তর্জাতিক পর্যটক থাইল্যান্ড ভ্রমণ করেছেন, যা থেকে প্রায় ১.৮ ট্রিলিয়ন থাই বাত (প্রায় ৬,০০০ বিলিয়ন বাংলাদেশী টাকা) আয় হয়েছে।
তারা আশা করছেন, ২০২৪ সালে প্রায় ৩৯ থেকে ৪০ মিলিয়ন পর্যটকের আগমন ঘটবে, যা থেকে ৩ ট্রিলিয়ন থাই বাত আয় করা সম্ভব হবে।
যদি আপনিও “হোয়াইট লোটাস”-এর মত থাইল্যান্ডে ছুটি কাটাতে চান, তাহলে এই স্থানগুলো আপনার ভ্রমণ তালিকায় যোগ করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন