মার্কিন বাজারে স্বস্তি! রেকর্ড উচ্চতায় সোনা, বিনিয়োগকারীদের চোখে জল!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে মঙ্গলবার সকালে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে, যেখানে বিনিয়োগকারীরা সোমবারের বড় দরপতনের পর ধীরে ধীরে বাজারে প্রবেশ করতে শুরু করেন। একইসঙ্গে, বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতার মধ্যে সোনার দাম নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ মঙ্গলবার প্রায় ৪০০ পয়েন্ট বা ১ শতাংশ বৃদ্ধি দেখিয়েছে। বৃহত্তর এসএন্ডপি ৫০০ সূচকও ১ শতাংশ বেড়েছে। প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের সূচক নাসডাক কম্পোজিট ১.২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের প্রতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রমাগত সমালোচনার কারণে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সতর্ক ছিলেন।

নাসডাক এবং ডাউ উভয় সূচকই টানা চার দিনের পতনের ধারা ভেঙে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, প্রধান তিনটি সূচকই সম্ভবত ২০২২ সালের পর থেকে সবচেয়ে খারাপ মাস অতিবাহিত করতে চলেছে, আর ডাউয়ের জন্য ১৯৩২ সালের এপ্রিল মাসের পর এটি সবচেয়ে খারাপ সময় হতে যাচ্ছে।

শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, বিনিয়োগকারীরা ট্রাম্পের এই মন্তব্যের ওপর নজর রাখছেন যে তিনি সুদের হার কমাতে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যানের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এবং প্রেসিডেন্টের এই ধরনের মন্তব্য বাজারকে কিছুটা হলেও অস্থির করে তুলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেডারেল রিজার্ভ প্রধানকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা নেই, কারণ নীতিগত মতপার্থক্যের কারণে এমনটা করা যায় না। তবে, ট্রাম্প নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রচলিত রীতি ভাঙতে প্রস্তুত রয়েছেন।

এদিকে, মঙ্গলবার বাজারে সোনার দাম নতুন রেকর্ড গড়ে প্রতি আউন্স ৩,৫০০ ডলারের উপরে উঠেছে। চলতি বছর মূল্যবান এই ধাতুটির দাম ৩০ শতাংশের বেশি বেড়েছে, যেখানে গত বছর এর মূল্য বৃদ্ধি ছিল ২৭ শতাংশ।

বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা এখন নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনার দিকে ঝুঁকছেন।

অন্যদিকে, বিনিয়োগকারীরা চলতি সপ্তাহে বাণিজ্য আলোচনায় সম্ভাব্য অগ্রগতির দিকে নজর রাখবেন। একইসঙ্গে, প্রথম ত্রৈমাসিকের আয়ের ফলাফল প্রকাশের দিকেও তাদের মনোযোগ থাকবে।

বিশেষ করে, টেসলার (Tesla) আয়ের হিসাবের দিকে সবাই তাকিয়ে আছে। কারণ, বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রস্তুতকারক এই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৩ শতাংশ কমেছে।

সিএনএন-এর ‘ভয় ও লোভ সূচক’ অনুসারে, মঙ্গলবার বাজারের পরিস্থিতি ছিল ‘চরম ভয়ের’ মধ্যে। এই সূচকটি পুরো মাস জুড়েই ‘চরম ভয়ের’ ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও কিছু প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন, এর ফলে প্রবাসী আয়, রপ্তানি এবং বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে।

তাই, বিশ্ব বাজারের এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *