মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান, পিট হেগসেথের বিরুদ্ধে আবারও গোপন সামরিক তথ্য আদান-প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এবার তিনি এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপ ‘সিগন্যাল’-এর মাধ্যমে পরিবারের সদস্য এবং নিরাপত্তা অনুমোদন নেই এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে স্পর্শকাতর তথ্য বিনিময় করেছেন।
এই ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। খবরটি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘দি গার্ডিয়ান’।
জানা গেছে, হেগসেথের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি ইয়েমেনে হাউছি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে চালানো সামরিক অভিযানের বিস্তারিত তথ্য, যেমন—যুদ্ধ বিমানের উড্ডয়ন এবং বোমা নিক্ষেপের সময়সীমা, ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার মতো বিষয়গুলো শেয়ার করেছেন।
এমনকি তাঁর স্ত্রী, ভাই এবং ব্যক্তিগত আইনজীবীর সঙ্গেও তিনি এই তথ্য আদান-প্রদান করেছেন, যাদের নিরাপত্তা বিষয়ক কোনো অনুমোদন ছিল না।
তবে, হেগসেথ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, তিনি যে তথ্য আদান-প্রদান করেছেন, তা মূলত মিডিয়া সমন্বয়ের জন্য ছিল এবং এর কোনোটিই গোপন বা শ্রেণিবদ্ধ ছিল না।
এছাড়া, তিনি এই ঘটনার জন্য সাবেক কর্মকর্তাদের দায়ী করেছেন। তাঁর মতে, এই কর্মকর্তারা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় নিয়োগ পেয়েছিলেন এবং তাঁরাই তথ্য ফাঁস করছেন।
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে এবং প্রমাণ পাওয়া গেলে তা বিচার বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে, হেগসেথের এমন কাজের তীব্র নিন্দা করেছেন অনেকে। সাবেক মার্কিন নৌ-বাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল জেমস স্ট্যাভরিডিস সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “পৃথিবীতে এমন কোনো কারণ নেই, যার জন্য তাঁর (হেগসেথের) এটা করা উচিত ছিল। এবং তিনি নিজেও তা জানেন।”
এমনকি রিপাবলিকান দলের সদস্য এবং হাউজ আর্মড সার্ভিসেস সাইবার সাবকমিটির চেয়ারম্যান, প্রাক্তন বিমান বাহিনীর জেনারেল ডন বেকনও হেগসেথকে অপসারণের পক্ষে মত দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও একবার হেগসেথের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। তিনি ‘সিগন্যাল’-এর মাধ্যমে ‘দ্য আটলান্টিক’-এর সম্পাদক-ইন-চিফ জেফরি গোল্ডবার্গের সঙ্গে সামরিক তথ্য আদান-প্রদান করেছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিরক্ষা বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে থেকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড জাতীয় নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার ক্ষেত্রে গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে। বিষয়টি কিভাবে দেখা হচ্ছে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: দি গার্ডিয়ান