টেক্সাস লটারি: শীর্ষ নির্বাহীর পদত্যাগ, বিশাল পুরস্কার জেতা নিয়ে বিতর্ক
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের লটারি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী পরিচালক, রায়ান মিন্দেল পদত্যাগ করেছেন।
সম্প্রতি লটারির পুরস্কার জেতা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের শুরুতে বিশাল অঙ্কের পুরস্কার জেতার ঘটনা ঘটেছে, যা প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলারের সমান।
এই ঘটনার জেরে টেক্সাসের গভর্নর এবং আইনপ্রণেতাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত একটি লটারিতে ৯৫ মিলিয়ন ডলারের বিশাল পুরস্কার জেতা হয়। এরপর, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৮৩ মিলিয়ন ডলারের একটি টিকিট জেতা হয়, যা নিয়ে সন্দেহ আরও বাড়ে।
এই দুটি ঘটনার পরই লটারির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বিশেষ করে অনলাইন কুরিয়ার কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে টিকিট বিক্রি নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। এই কুরিয়ার কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের হয়ে টিকিট কিনে থাকে।
টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল কেন প্যাক্সটনও একটি তদন্ত শুরু করেছেন।
অন্যদিকে, টেক্সাস রাজ্যের আইনপ্রণেতারা কুরিয়ার কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে টিকিট বিক্রি বন্ধ করার পাশাপাশি লটারি কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করার বিষয়েও আলোচনা করছেন।
টেক্সাস লটারি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কুরিয়ার কোম্পানিগুলোকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। তবে কুরিয়ার কোম্পানিগুলো তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তাদের দাবি, পুরস্কার জেতার ক্ষেত্রে তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না।
টেক্সাস রাজ্যে লটারি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর আয়ের একটি অংশ রাজ্যের শিক্ষাখাতে ব্যয় করা হয়। ২০২৪ সালে এই লটারি থেকে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার শিক্ষাখাতে দেওয়ার কথা ছিল।
বর্তমানে, টেক্সাস রাজ্যের আইনসভা তাদের দ্বি-বার্ষিক অধিবেশনের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তারা হয়তো কুরিয়ার কোম্পানিগুলোর টিকিট বিক্রি বন্ধ করতে আইন তৈরি করবে, অথবা লটারি বন্ধ করার মতো কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে।
এই মুহূর্তে, ফেব্রুয়ারির লটারির বিজয়ীর পুরস্কার প্রদান স্থগিত করা হয়েছে, যতক্ষণ না রাজ্যের তদন্ত শেষ হচ্ছে।
আইন অনুযায়ী, বিজয়ীরা তাদের পরিচয় গোপন রাখতে পারেন। এপ্রিল ২০২৩ এর পুরস্কারের ক্ষেত্রে, বিজয়ী একটি কোম্পানির মাধ্যমে প্রায় ৫৭.৮ মিলিয়ন ডলারের এককালীন অর্থ গ্রহণ করেছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। লটারির স্বচ্ছতা এবং কুরিয়ার কোম্পানিগুলোর ভূমিকা নিয়ে জনমনেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, তদন্ত শেষে কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নেয় এবং লটারির ভবিষ্যৎ কী হয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন