মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কমছে জন্মহার! উদ্বিগ্ন ট্রাম্প প্রশাসন, বাড়ছে বিতর্ক

যুক্তরাষ্ট্রে জন্মহার বর্তমানে উদ্বেগজনক হারে কমে এসেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০২৪ সালে প্রতি ১০০০ জন প্রজননক্ষম নারীর মধ্যে জন্মহার ছিল প্রায় ৫৪.৬ জন। যা আগের বছরগুলোর তুলনায় সামান্য বাড়লেও, অতীতের তুলনায় অনেক কম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই হার দেশটির ইতিহাসে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (Centers for Disease Control and Prevention) -এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩৬ লক্ষ শিশুর জন্ম হয়েছে। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, জন্মহার কমার এই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।

সাধারণত দেখা যায়, অর্থনৈতিক সংকটকালে এই হার আরও কমে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর জন্মহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছিল। যদিও ২০২১ সালে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির সময় জন্মহার কিছুটা বেড়েছিল, তবে সেটি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে, দেশটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জন্মহার বাড়াতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি একসময় যুক্তরাষ্ট্রে ‘শিশু বিপ্লব’ ঘটানোর আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছিলেন। এছাড়াও, তিনি ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) চিকিৎসা পদ্ধতির সুযোগ আরও বাড়ানোর জন্য একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন।

তবে, এই পদক্ষেপের পাশাপাশি, সরকারের পক্ষ থেকে প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি কাটছাঁট করার খবরও পাওয়া যাচ্ছে।

সরকারি সূত্র থেকে জানা গেছে, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (CDC) প্রজনন স্বাস্থ্য বিভাগের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এর ফলে গর্ভপাত বিষয়ক নজরদারি, জন্মনিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গাইডলাইন, আইভিএফ বিষয়ক তদারকি, এবং গর্ভধারণের ঝুঁকি মূল্যায়নসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ কাজ করে। এর মধ্যে রয়েছে আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক অভিজ্ঞতা।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে মাতৃস্বাস্থ্য বিষয়ক সেবার সংকটও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে, কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার এখনো অনেক বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য কিছু ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হতে পারে। কারণ, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক চ্যালেঞ্জগুলো উভয় দেশেই গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও অর্থনৈতিক চাপ, স্বাস্থ্যসেবার অভাব এবং নারীদের ক্ষমতায়ন জন্মহারের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *