শিরোনাম: নতুন পোপ নির্বাচনের দায়িত্বে: ডাবলিন থেকে আসা আইরিশ-আমেরিকান কার্ডিনাল।
ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর নতুন পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পেয়েছেন কার্ডিনাল কেভিন ফারেল।
তিনি একজন আইরিশ-আমেরিকান ধর্মযাজক, যিনি বর্তমানে ভ্যাটিকানের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন।
কার্ডিনাল ফারেলের জন্ম ১৯47 সালে, আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের একটি শ্রমিক শ্রেণির পরিবারে।
তাঁর বেড়ে ওঠা ছিল ডাবলিনের ড্রিমনাগ এলাকার এক সাধারণ পরিবেশে। স্থানীয় ভাষায়, তিনি ছিলেন ‘কেভিন ফ্রম ডাবলিন’।
খুব সাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা এই মানুষটি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ক্যাথলিক চার্চের প্রধানের পদে নির্বাচনের দায়িত্বে রয়েছেন।
পোপের মৃত্যুর পর ‘ক্যামেরলেঙ্গো’ বা পোপের সহকারী হিসেবে কার্ডিনাল ফারেলকেই এই প্রক্রিয়া তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনিই নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য কনক্লেভ আহ্বান করবেন।
এই কনক্লেভে কার্ডিনালরা মিলিত হয়ে নতুন পোপ নির্বাচন করবেন, যা সারা বিশ্বের ক্যাথলিকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা।
ফারেলের বেড়ে ওঠা এবং শিক্ষা জীবন ছিল খুবই সাধারণ।
তিনি স্পেনের সালামাঙ্কা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইতালির পন্টিফিকাল গ্রেগোরিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।
এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি আর্চডায়োসিসে কাজ করেন এবং পরে তিনি আমেরিকার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।
টেক্সাসের ডালাসের বিশপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর, পোপ ফ্রান্সিস ২০১৬ সালে তাঁকে কার্ডিনাল পদে উন্নীত করেন।
কার্ডিনাল ফারেলের ব্যক্তিত্ব উষ্ণ এবং তিনি সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি আগ্রহী।
তবে কিছু ক্ষেত্রে তাঁর রক্ষণশীল মনোভাব সমালোচিত হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, তিনি সমকামিতা এবং গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়ে তাঁর ভিন্ন মত পোষণ করেন।
পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে সম্পন্ন হয়।
কনক্লেভের সময় কার্ডিনালরা বাইরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যান এবং তাঁদের গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নতুন পোপ নির্বাচিত করা হয়।
এই প্রক্রিয়ায় কার্ডিনাল ফারেলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইতিহাসে ক্যামেরলেঙ্গো হিসেবে দায়িত্ব পালন করা খুব কম ব্যক্তিই পোপ নির্বাচিত হয়েছেন।
এর আগে, ১৮৭৮ সালে জিওআচিনো পেচ্চি (যিনি পোপ লিও ত্রয়োদশ হন) এবং ১৯৩৯ সালে ইউজেনিও প্যাসেলেই (যিনি পোপ পায়াস দ্বাদশ হন) এই বিরল সম্মান অর্জন করেছিলেন।
এখন দেখার বিষয়, কার্ডিনাল ফারেল নতুন পোপ নির্বাচনের দায়িত্ব কতটা সফলভাবে পালন করতে পারেন।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।