আফ্রিকার শিকারিদের বিরুদ্ধে ওয়েলসের কুকুরদের যুদ্ধ, দেখুন কিভাবে!

আফ্রিকার বন্যপ্রাণী পাচার রোধে ওয়েলসের কুকুর: এক অভিনব প্রচেষ্টা।

আফ্রিকার বন্যপ্রাণী, বিশেষ করে গন্ডার ও হাতির জীবন বাঁচাতে এক অভিনব উপায় খুঁজে বের করেছে ওয়েলসের একটি সংস্থা। “ডগস4ওয়াইল্ডলাইফ” নামের এই সংস্থাটি কুকুরদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বন্যপ্রাণী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই কুকুরগুলি পাচারকারীদের খুঁজে বের করতে এবং তাদের আটকাতে বিশেষভাবে দক্ষ।

ওয়েলসের কারমারথেন শহরে ড্যারেন প্রিডল ও জ্যাকি ল’র তত্ত্বাবধানে এই কুকুরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

মূলত, তারা বেলজিয়ান ম্যালিনয়েজ ও ডাচ শেফার্ড জাতের কুকুর ব্যবহার করেন। এছাড়াও ল্যাব্রাডর এবং স্প্যানিয়েলও ব্যবহার করা হয়।

কুকুরদের ছোটবেলা থেকেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে তারা পরিবেশের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে।

তাদের ঘ্রাণশক্তি ও শিকার করার ক্ষমতার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়।

বন্যপ্রাণীর গন্ধ শনাক্ত করতে পারদর্শী করে তোলার জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

প্রশিক্ষণ শেষে এই কুকুরদের আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়, যেখানে তারা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ইউনিটের (এপিইউ) সঙ্গে কাজ করে।

মোজাম্বিক, তানজানিয়া, জিম্বাবুয়ে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোতে এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরদের পাঠানো হয়।

এই কুকুরগুলি বন্যপ্রাণী পাচারকারীদের খুঁজে বের করতে, তাদের ফেলে যাওয়া নিদর্শনের সূত্র ধরে অপরাধীদের চিহ্নিত করতে এবং বন্যপ্রাণী পাচার রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কুকুরদের সাফল্যের গল্পও রয়েছে।

“শিংগা” নামের একটি কুকুর জিম্বাবুয়ের একটি এলাকায় পাচারকারীর ৪.৫ কিলোমিটার পথ অনুসরণ করে তাকে ধরিয়ে দেয়।

এছাড়া, “ড্যান” নামের আরেকটি কুকুর দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি ফাঁদে পড়া গন্ডারের বাচ্চাকে উদ্ধার করতে সাহায্য করেছিল।

ডগস4ওয়াইল্ডলাইফ শুধু কুকুরদের প্রশিক্ষণ দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি।

তারা স্থানীয় শিশুদের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে উৎসাহিত করতে “সিয়াফুন্দা এনগেমভেলো” নামে একটি শিক্ষামূলক কর্মসূচিও চালু করেছে।

এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুদের বন্যপ্রাণীর প্রতি ভালোবাসা জাগানো এবং তাদের সংরক্ষণে উৎসাহিত করা হয়।

আফ্রিকা মহাদেশে গন্ডার শিকার একটি গুরুতর সমস্যা।

চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্যে একসময় গন্ডারের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছিল।

যদিও বর্তমানে কিছু ক্ষেত্রে এর উন্নতি হয়েছে, কিন্তু এখনো প্রতি বছর প্রায় ৬০০ গন্ডার শিকার হয়।

বন্যপ্রাণী পাচার শুধু একটি দেশের সমস্যা নয়, এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা।

তাই, ডগস4ওয়াইল্ডফের এই প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য এবং অন্যান্য দেশগুলির জন্য একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *