যুক্তরাজ্যের একটি প্রভাবশালী ইহুদি সংগঠনের কয়েক ডজন সদস্য ইসরায়েল নীতির সমালোচনা করায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সম্মুখীন হচ্ছেন। ব্রিটেনের ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রধান সংগঠন ‘বোর্ড অফ ডেপুটিজ’-এর প্রায় ছত্রিশ জন সদস্য গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে একটি খোলা চিঠি লেখেন।
এর পরেই তাঁদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, চিঠিটি ইসরায়েল সম্পর্কে তাদের নীতিকে প্রতিফলিত করে না। ব্রিটেনের ফিনান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত ওই খোলা চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা গাজায় চলমান যুদ্ধের বিষয়ে নীরব থাকতে রাজি নন বলে উল্লেখ করেছেন।
তাঁরা লিখেছেন, “আমরা আর চোখ বুজে থাকতে পারি না। ইসরায়েলের আত্মা ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে।”
চিঠিতে আরও বলা হয়, “এই পরিস্থিতি অসহনীয় হওয়ায় চোখ ফিরিয়ে নেওয়ার প্রবণতা তীব্র, কিন্তু আমাদের ইহুদি মূল্যবোধ আমাদের রুখে দাঁড়াতে এবং কথা বলতে বাধ্য করে।”
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে আক্রমণের পর থেকে বোর্ড অফ ডেপুটিজ ইসরায়েল সরকারের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছিল। এই প্রেক্ষাপটে, সংগঠনের সদস্যদের এমন পদক্ষেপ গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
বোর্ড অফ ডেপুটিজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনার জেরে একটি অভিযোগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে, যা সম্পন্ন হতে কমপক্ষে চার সপ্তাহ সময় লাগবে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বোর্ডের আন্তর্জাতিক বিভাগের ভাইস-চেয়ার হ্যারিয়েট গোল্ডেনবার্গকে সাময়িকভাবে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তাঁকে কার্যনির্বাহী কমিটির দায়িত্ব থেকেও সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছে।
বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ফিল রোজেনবার্গ বলেছেন, “আমরা আচরণবিধির লঙ্ঘনের অভিযোগকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখি।” তিনি আরও যোগ করেন, “বোর্ড অফ ডেপুটিজ স্পষ্ট করে বলতে চায়, শুধুমাত্র আমাদের নির্বাচিত কর্মকর্তারা এবং অনুমোদিত কর্মীরাই সংগঠনের পক্ষে কথা বলতে পারেন।”
সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী মাইকেল ওয়েগিয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, “কয়েকজন ডেপুটি জাতীয় সংবাদপত্রে তাঁদের মতামত প্রকাশ করেছেন। তাঁদের এই পদক্ষেপের কারণে সম্প্রদায়ের অনেকেই ভুল ধারণা করছেন যে, এটি বোর্ডের আনুষ্ঠানিক অবস্থান।”
তিনি আরও যোগ করেন, “সংবাদপত্রে ভিন্নমত প্রকাশ করা এবং সম্প্রদায়ের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা একটি দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নয়।”
জানা গেছে, চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের অধিকাংশই সংস্কারপন্থী, উদারপন্থী বা মাসোরতি সম্প্রদায়ের সদস্য। অভিযোগ এসেছে মূলত ইউনাইটেড সিনাগগ-এর সদস্যদের কাছ থেকে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান