২১ বছর বয়সে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে তরুণীর না ফেরার দেশে…

বিখ্যাত তরুণী, ডমিনিক ম্যাকশেইন, যিনি ছিলেন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, মাত্র একুশ বছর বয়সে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এপ্রিল মাসের শুরুতেই তিনি জানতে পারেন যে তার এই রোগটি সারানো সম্ভব নয়।

এরপর তিনি তার জীবনের শেষ দিনগুলো সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলেছেন, যা অনেকের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে।

ডমিনিক, যিনি টিকটক এবং ইন্সটাগ্রামে বেশ পরিচিত ছিলেন, প্রায় দুই লক্ষাধিক অনুসারীর সাথে তার জীবনের এই কঠিন মুহূর্তগুলো ভাগ করে নিয়েছিলেন। তিনি তার অনুসারীদের জানিয়েছিলেন যে, তার চিকিৎসার আর বেশি সময় নেই।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, তার আয়ু হয়তো কয়েক দিন অথবা কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত। দ্রুত তার লিভারের কার্যকারিতা কমতে শুরু করে এবং জন্ডিস দেখা দেয়।

এই অবস্থায় তিনি “হসপিচ কেয়ার”-এ যান, যেখানে তার প্রধান লক্ষ্য ছিল যন্ত্রণা কমানো এবং শরীরের খারাপ দিকগুলো নিয়ন্ত্রণ করা।

মৃত্যুর আগে তিনি তার অনুসারীদের উদ্দেশ্যে লিখেছিলেন, “আমার জীবন হয়তো ছোট, কিন্তু আমি মনে করি আমি এর প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি।

আমি এমন একটি পরিবার পেয়েছি যারা আমাকে নিঃশর্ত ভালোবাসে, বন্ধু পেয়েছি যারা আমার জন্য তাদের লিভার দিতেও রাজি ছিল।”

ডমিনিক আরও লিখেছিলেন, “আমি প্রায়ই স্বর্গের কথা ভাবি – এমন একটি জায়গা যেখানে আমি অবশেষে এতদিনের কষ্ট থেকে মুক্তি পাব।

সেখানে আমি দৌড়াতে পারব, শ্বাস নিতে পারব, নিজেকে সম্পূর্ণ মনে করতে পারব।”

ক্যান্সারের সাথে লড়াইয়ের শুরুটা ছিল অপ্রত্যাশিত। ডমিনিক, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়ছিলেন এবং একই সাথে মানব সম্পদ বিভাগে খণ্ডকালীন কাজ করতেন, এই রোগ ধরা পড়ার পর পড়াশোনা ও চাকরি দুটোই ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।

তিনি জানান, ক্যান্সারের চিকিৎসা বেশ কঠিন ছিল এবং এর ফলে তাকে অনেক খারাপ দিন কাটাতে হয়েছে।

ডমিনিক চেয়েছিলেন, তার এই অভিজ্ঞতা অন্যদের কাজে আসুক। তিনি তরুণদের মধ্যে কোলন ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে চেয়েছিলেন।

সেই কারণে, তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার জীবনের গল্প তুলে ধরেন।

ক্যান্সারের সাথে লড়াইয়ের এই কঠিন সময়েও, ডমিনিক তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো উদযাপন করেছেন।

গত বছর জুলাই মাসে তিনি শন সুসনকে বিয়ে করেন এবং থাইল্যান্ডে মধুচন্দ্রিমায় যান।

তিনি একবার বলেছিলেন, “যখন আমি জানতে পারলাম আমার ক্যান্সার হয়েছে এবং মা হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তখন মনে হয়েছিল যেন আমার থেকে অনেক কিছু কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

জীবনের অনেক সাধারণ অভিজ্ঞতা থেকে আমি বঞ্চিত হয়েছি। তবে আমি একটি কাজ করতে পেরেছি, আর তা হলো বিয়ে করা।”

ডমিনিকের এই গল্প, আমাদের মনে করিয়ে দেয় জীবনের অনিশ্চয়তা এবং প্রতিটি মুহূর্তকে ভালোবাসার গুরুত্ব।

একই সাথে, ক্যান্সার সচেতনতা এবং রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্তকরণের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *