পুতিনের নয়া চাল? যুদ্ধ বন্ধের পরিকল্পনা?

যুদ্ধ কি তবে থামতে চলেছে ইউক্রেনে?

ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া সম্ভবত ইউক্রেনের চারটি আংশিকভাবে অধিকৃত অঞ্চল ত্যাগের বিনিময়ে বর্তমান যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন করতে রাজি হতে পারে। এর পাশাপাশি, তারা ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি চাইছে।

তবে, এই বিষয়ে ক্রেমলিন সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তাদের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই ধরনের খবরকে ‘ভুয়া’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

যদিও, এই আলোচনার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি রাশিয়ার জন্য একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। তার মতে, রাশিয়া এখন আর এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত সম্পদ রাখে না।

উপরন্তু, পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা এবং জনশক্তির অভাবে দেশটির উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ক্রিমিয়াকে স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এর মাধ্যমে তিনি একদিকে যেমন নিজের দেশের জনগণের কাছে একটি ইতিবাচক চিত্র তুলে ধরতে পারবেন, তেমনি আলোচনার টেবিলে দর কষাকষির সুযোগ পাবেন।

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো ইতিবাচক ইঙ্গিত দেননি। তিনি ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাজি নন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের এই কৌশল আসলে দ্বি-মুখী। একদিকে তিনি আলোচনার টেবিলে আসতে চাইছেন, অন্যদিকে আলোচনার শর্তগুলো রাশিয়ার পক্ষে রাখতে চাইছেন।

এর মূল উদ্দেশ্য হলো, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আলোচনার মধ্যে রাখা এবং যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে রাশিয়ার ওপর থেকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়া।

এই মুহূর্তে, রাশিয়া ক্রিমিয়াকে কেন্দ্র করে একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। জেলেনস্কি ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে মানতে নারাজ।

এর ফলস্বরূপ, লন্ডনে হতে যাওয়া শান্তি আলোচনা ভেস্তে গেছে। অন্যদিকে, রাশিয়া এখনো পর্যন্ত তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

তারা ১,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ সীমান্ত জুড়ে তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে। তবে সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার কাছে পর্যাপ্ত জনবল ও অস্ত্রশস্ত্রের অভাব রয়েছে।

যুদ্ধ কবে শেষ হবে, তা এখনই বলা কঠিন। তবে ইউক্রেনের একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, আগামী শীতের মধ্যে হয়তো রাশিয়াকে কিছু ছাড় দিতে বাধ্য করা যেতে পারে।

কারণ, নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ছে।

বর্তমানে, রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য হলো পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলে তাদের সামরিক অভিযান জোরদার করা। এরপর তারা আলোচনার মাধ্যমে তাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে চাইছে।

তথ্যসূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *