শিরোনাম: মিশরের কারাগারে অনশনরত ব্রিটিশ-মিশরীয় অধিকারকর্মীর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ, মুক্তির আবেদন পরিবারের
মিশরের কারাগারে বন্দী একজন ব্রিটিশ-মিশরীয় অধিকারকর্মী আলাা আবদেল-ফাত্তাহের স্বাস্থ্য নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তাঁর পরিবার। জানা গেছে, ৫২ দিনের বেশি সময় ধরে তিনি অনশন পালন করছেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তাঁকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তাঁর মুক্তির জন্য পরিবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
৪২ বছর বয়সী আলাা আবদেল-ফাত্তাহ একজন পরিচিত রাজনৈতিক সমালোচক। ২০১১ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময় থেকে তাঁকে একাধিকবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০২১ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা খবর ছড়ানো এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ আনা হয়। যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করে।
তাঁর সাজা শেষ হওয়ার পরও তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।
আলাার পরিবার জানিয়েছে, গত ১ মার্চ থেকে তিনি তৃতীয় দফায় অনশন শুরু করেন। এর আগে তাঁর মা, লাইলা সুয়েফ, ছেলের মুক্তির দাবিতে অনশন পালন করেছিলেন এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
জানা গেছে, বর্তমানে আলাা বমি, পেট খারাপ এবং অতিরিক্ত দুর্বলতায় ভুগছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, খাদ্যনালীতে তাঁর দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ দেখা দিয়েছে এবং অনশনের কারণে তাঁর শরীরে ওষুধ কাজ করছে না।
আলাার বোন সানাা সেইফ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের কাছে জরুরি ভিত্তিতে তাঁর ভাইয়ের মুক্তির জন্য মিশরের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার আবেদন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমরা সবসময় একটি ট্র্যাজেডির আশঙ্কায় থাকি। আলাাকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে আনতে কেইর স্টারমারকে প্রয়োজনীয় সব কিছুই করতে হবে।”
আলাার মা লাইলা সুয়েফও ছেলের স্বাস্থ্য নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আলাা এই অনশন সহ্য করতে পারবে না।”
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আলার বন্দীত্বকে ‘বেআইনি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
২০২২ সালে, ব্রিটিশ-মিশরীয় এই অধিকারকর্মীর ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টি তাঁর মুক্তির আন্দোলনকে আরও বেগবান করেছে। তাঁর পরিবার জানায়, বন্দী থাকা অন্যান্য কর্মীদের প্রতি সমর্থন জানাতেও তাঁরা এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
আগের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে আলাার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
উল্লেখ্য, মিশরের প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন