ফাঁকা দাঁত নিয়ে দ্বিধা? সৌন্দর্য না আদর্শ, কোন পথে?

মুখের সৌন্দর্য নিয়ে মানুষের আগ্রহ বরাবরই বেশি। আর এই সৌন্দর্যের ধারণা সময়ের সাথে সাথে বদলায়।

পশ্চিমা বিশ্বে ‘গ্যাপ টিথ’ বা ফাঁকা দাঁত নিয়ে মানুষের মনে দ্বিধা থাকলেও, এখন যেন এটি ফ্যাশনের অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমাদের দেশে কি এই ধারণা একইরকম?

সম্প্রতি, পশ্চিমা বিশ্বের একটি প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে ‘গ্যাপ টিথ’ নিয়ে সৌন্দর্য সচেতনতা এবং দাঁতের চিকিৎসার প্রবণতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেই আলোচনার প্রেক্ষাপটে, আজকের লেখায় আমরা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে দাঁতের ফাঁক নিয়ে বিদ্যমান ধারণা, এই বিষয়ে চিকিৎসা এবং সৌন্দর্যচর্চার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করব।

পশ্চিমা বিশ্বে ‘গ্যাপ টিথ’ এর প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের একটি বড় কারণ হলো সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এই বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব। অনেক সেলিব্রিটি, যেমন – আমেরিকান অভিনেত্রী অ্যায়ো এদেবিরি (Ayo Edebiri), মার্গারেট কোয়ালি (Margaret Qualley) এবং অ্যাইমি লু উড (Aimee Lou Wood), তাঁদের দাঁতের ফাঁক নিয়ে গর্বিত।

তাঁদের এই আত্মপ্রকাশ অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তবে, একইসাথে পশ্চিমা বিশ্বে দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য কসমেটিক ডেন্টিস্ট্রির চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে।

দাঁতের ফাঁক বন্ধ করা থেকে শুরু করে, দাঁত সাদা করা বা বাঁকা দাঁত সোজা করার মতো চিকিৎসা এখন অনেক বেশি প্রচলিত। এই চিকিৎসার খরচ এতটাই বেশি যে অনেক সময় সাধারণ মানুষের পক্ষে তা বহন করা কঠিন হয়ে পড়ে।

এবার আসা যাক বাংলাদেশের প্রসঙ্গে। আমাদের দেশে দাঁতের ফাঁক নিয়ে মানুষের ধারণা মিশ্রিত। কারো কারো মতে, দাঁতের সামান্য ফাঁক সৌন্দর্যহানি করে, আবার কারো কারো কাছে এটি স্বাভাবিক এবং আকর্ষণীয়।

বিশেষ করে, মেয়েদের বিয়ের বাজারে সুন্দর দাঁতের একটি আলাদা কদর রয়েছে। এই কারণে, অনেকেই দাঁতের ফাঁক বন্ধ করতে চান। বাংলাদেশেও এখন কসমেটিক ডেন্টিস্ট্রির চাহিদা বাড়ছে।

উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং তুলনামূলকভাবে কম খরচে ভালো মানের চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় অনেকেই এই দিকে ঝুঁকছেন।

তবে, কসমেটিক ডেন্টিস্ট্রির ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। চিকিৎসার গুণগত মান, অভিজ্ঞ ডেন্টিস্টের পরামর্শ এবং খরচ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত।

অনেক সময় কম খরচে চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই, নির্ভরযোগ্য ডেন্টিস্ট এবং ভালো মানের চিকিৎসা কেন্দ্র বেছে নেওয়াটা খুব জরুরি।

এছাড়াও, দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত ডেন্টাল চেকআপ করানো, দাঁত ব্রাশ করার সঠিক নিয়ম জানা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন।

মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে, দাঁতের সৌন্দর্য নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা কমে আসে।

‘গ্যাপ টিথ’ নিয়ে মানুষের ব্যক্তিগত পছন্দ এবং সমাজের সৌন্দর্যের ধারণা – দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি আপনার দাঁতের ফাঁক নিয়ে চিন্তিত হন, তবে একজন অভিজ্ঞ ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

সৌন্দর্য একটি আপেক্ষিক বিষয়। নিজের শরীরের প্রতি ভালোবাসা এবং আত্মবিশ্বাস থাকলে, সৌন্দর্য নিয়ে দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে যায়।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *