গতকাল, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠল ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ। এই হামলায় অন্তত আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন বহু মানুষ।
গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধের মধ্যে কিয়েভে চালানো এটি অন্যতম ভয়াবহ আক্রমণ।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতের বেলা কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন বাজার পরেই এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে চালানো এই হামলায় বহু বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধারকর্মীরা হতাহতদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
ইউক্রেনের জরুরি বিভাগ জানিয়েছে, কিয়েভে চালানো এই হামলায় অন্তত আটজন নিহত এবং ৪২ জনের বেশি আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬ জন শিশুও রয়েছে। একই সঙ্গে, রাশিয়ার সেনারা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভেও ব্যাপক হামলা চালিয়েছে।
খারকিভের মেয়র ইগর তেরেখভ জানিয়েছেন, শহরটিতে অন্তত সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। হামলার শিকার হয়েছে ঘনবসতিপূর্ণ একটি আবাসিক এলাকাও, যেখানে অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের ছোড়া ৮৭টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে ৪৫টি ক্রিমিয়ার আকাশে ধ্বংস করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়াকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে নেয়।
এই হামলার পর ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে মেনে নিতে রাজি না হওয়ায় তীব্র সমালোচনা করেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনো পর্যন্ত ইউক্রেনের বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা সম্পূর্ণ বন্ধ করার বিষয়ে জেলেনস্কির প্রস্তাবের কোনো জবাব দেননি। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের পক্ষ থেকে শর্তহীন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও, পুতিন তা প্রত্যাখ্যান করেন।
জেলেনস্কির অন্যতম উপদেষ্টা আন্দ্রেই ইয়ারমাক বলেছেন, ‘পুতিনের একমাত্র লক্ষ্য হলো মানুষ হত্যা করা। বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।’
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এক শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন এবং তিনি এই বিষয়ে আলোচনা করতে জেলেনস্কিকে রাজি করাতে সমস্যা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন। কিয়েভে বসবাসকারী অনেকে ট্রাম্পের এই শান্তি প্রস্তাবকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না।
তারা মনে করেন, ট্রাম্পের উচিত চুপ থাকা। তারা রাশিয়ার মিথ্যাচার এবং আমেরিকার চাপিয়ে দেওয়া শর্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা