ব্যবহারকারীর অজান্তে তথ্য পাচার, DeepSeek-এর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ!

চীনভিত্তিক একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) স্টার্টআপ, ডিপসিক-এর বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর তথ্য অনুমতি ছাড়াই স্থানান্তরের অভিযোগ এনেছে দক্ষিণ কোরিয়ার তথ্য সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার জেরে ফেব্রুয়ারিতে তাদের এআই মডেলটি দক্ষিণ কোরিয়ার অ্যাপ স্টোর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা কমিশন (Personal Information Protection Commission) বৃহস্পতিবার জানায়, ডিপসিক ব্যবহারকারীর বিভিন্ন তথ্য, যেমন – তাদের প্রম্পট, ডিভাইস এবং নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত তথ্য, চীনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থায় পাঠিয়েছিল। কমিশন আরও জানায়, ব্যবহারকারীর ডেটা চীনের একটি ক্লাউড পরিষেবা, ‘ভলকানো ইঞ্জিন’-এ পাঠানো হয়েছে।

কমিশনের তদন্ত ব্যুরোর পরিচালক নাম সেওক এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ডিপসিক স্বীকার করেছে যে তারা দক্ষিণ কোরিয়ার ডেটা সুরক্ষা আইনগুলি পর্যাপ্তভাবে বিবেচনা করেনি। তারা কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে এবং নতুন ডাউনলোড স্থগিত করতে রাজি হয়েছে।

এই ঘটনার পর, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডেটা গোপনীয়তা এবং সুরক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় বলে জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা কখনোই কোনো কোম্পানি বা ব্যক্তিকে অবৈধ উপায়ে ডেটা সংগ্রহ বা সংরক্ষণ করতে বলিনি এবং ভবিষ্যতেও বলব না।”

ডিপসিক-এর আর১ মডেলটি গত জানুয়ারিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। কারণ, এর নির্মাতারা দাবি করেছিলেন যে মডেলটি তৈরি করতে তারা ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কম খরচ করেছেন। যেখানে ওপেনএআই এবং গুগলের মতো মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টদের এআই বাজেট কয়েক বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৬২ কোটি টাকার কাছাকাছি।

ডিপসিক-এর এই সাফল্য সিলিকন ভ্যালির কোম্পানিগুলোর একচেটিয়া আধিপত্যের ধারণাটিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। এর ফলে এনভিডিয়া এবং মেটা’র মতো কোম্পানিগুলির বাজার মূল্যায়ন নিয়েও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রযুক্তি খাতের প্রভাবশালী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অন্যতম, মার্ক আন্দ্রেসেন, ডিপসিক-এর মডেলটিকে ‘এআই-এর স্পুটনিক মুহূর্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *