যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের শহরতলীতে স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে ২০১৭ সালে ঘটে যাওয়া বন্দুক হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করা হয়।
এই হামলায় সাতজন নিহত হয় এবং আহত হয় বহু মানুষ।
অভিযুক্ত রবার্ট ই. ক্রিমো থ্রি-কে আদালত কক্ষে হাজির করা হয়নি। বিচারের শুরুতেই তিনি দোষ স্বীকার করেন।
হামলার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা এই রায়ের দিনে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা তাদের প্রিয়জনদের হারানোর গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং ক্রিমোর প্রতি তীব্র ঘৃণা ও ক্ষোভ জানান।
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে জানা যায়, হামলার দিন ক্রিমো নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল। গুলির শব্দে প্যারেড স্থলে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
মানুষজন জীবন বাঁচাতে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে শুরু করে। নিহতদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ।
এদের মধ্যে ছিলেন ৬৪ বছর বয়সী ক্যাথরিন গোল্ডস্টেইন, ৬৩ বছর বয়সী জ্যাকলিন সানহাইম, ৮৮ বছর বয়সী স্টিফেন স্ট্রাউস, ৭৮ বছর বয়সী নিকোলাস টলেডো-জারাগোজা, ৬৯ বছর বয়সী এডুয়ার্ডো উভালো এবং ৩৭ বছর বয়সী কেভিন ম্যাকার্থি ও তাঁর স্ত্রী ৩৫ বছর বয়সী ইরিনা ম্যাকার্থি।
আহতদের মধ্যে ছিলেন আট বছর বয়সী কুপার রবার্টস। গুলিবিদ্ধ হয়ে কোমর থেকে তার নিচ পর্যন্ত প্যারালাইজড হয়ে যায়।
কুপারের মা কেলি রবার্টস আদালতে বলেন, ক্রিমো একজন কাপুরুষ। তিনি আরও বলেন, “তোমার কোনো ক্ষমা নেই, তুমি এখন অপ্রাসঙ্গিক।”
আদালতে শুনানির সময়, ঘটনার ভয়াবহতা তুলে ধরতে ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, প্যারেডের সময় একটি ব্যান্ড দল “ইউ আর এ গ্র্যান্ড ওল্ড ফ্ল্যাগ” গানটি বাজাচ্ছিল।
হঠাৎ গুলির শব্দে সবাই আতঙ্কিত হয়ে দিকবিদিক ছুটতে শুরু করে।
আদালতে পেশ করা জবানবন্দিতে ক্রিমো জানায়, হামলার আগে সে কিছুক্ষণ দ্বিধাগ্রস্ত ছিল, কারণ তার বন্দুকের সমস্যা হচ্ছিল।
পরে সে সেটি মেরামত করে এবং হামলা চালায়। তদন্তকারীদের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা দেখা যায়নি।
এদিকে, ক্রিমোর বাবা রবার্ট ক্রিমো জুনিয়র-কেও ছেলের বন্দুক লাইসেন্স পেতে সহায়তার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। তিনি দোষ স্বীকার করে কম সময়ের জন্য কারাদণ্ড ভোগ করেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস