যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আলোচনা চলছে, যেখানে ব্রেক্সিটের (Brexit) পর সৃষ্ট সমস্যাগুলো কাটিয়ে অর্থনৈতিক অগ্রগতির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ব্রিটিশ সরকারের প্রধান আলোচক, নিক থমাস-সিমন্ডস জানিয়েছেন, উভয় পক্ষের মধ্যেকার এই নতুন চুক্তি অতীতের বিতর্কগুলো দূরে সরিয়ে দেবে।
আগামী মে মাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে, যেখানে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এই চুক্তির মূল লক্ষ্য হলো ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করা, তরুণদের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করা। ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে বাণিজ্য নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছিল, তা দূর করতেও এই চুক্তির গুরুত্ব রয়েছে।
আলোচনায় উঠে আসা বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো তরুণদের জন্য ভিসা স্কিম (youth mobility visa), খাদ্য ও পানীয় পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (SPS deal), কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে চুক্তি এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা। ব্রিটেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের একক বাজার, শুল্ক ইউনিয়ন অথবা অবাধ চলাচলের পুরনো অবস্থানে ফিরতে রাজি নয়।
লেবার পার্টির নেতা কেইর স্টারমার এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে, যেখানে এই চুক্তির অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। ব্রিটিশ সরকার মনে করে, একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে এবং বিশ্ব মঞ্চে ব্রিটেনের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করতে এই চুক্তি সহায়ক হবে।
তবে, যুবকদের জন্য ভিসা স্কিমের বিষয়ে সরকারের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। এই স্কিমের আওতায় ইউরোপ থেকে আসা তরুণরা ব্রিটেনে কাজ করতে পারবে। চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস এই স্কিমের পক্ষে মত দিলেও, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার এর সংখ্যা সীমিত রাখার বিষয়ে জোর দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চুক্তির ফলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে এবং কর্মসংস্থান বাড়বে। এটি উভয় পক্ষের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
এই চুক্তির ফলে, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়ে কিনা, সেদিকেও নজর রাখা দরকার।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান