মশা: এক আতঙ্কের নাম, যা কেড়ে নেয় জীবন!
বর্ষা আসতে না আসতেই যেন এক অদৃশ্য আতঙ্ক আমাদের চারপাশে ঘোরাফেরা করতে শুরু করে। আর তা হলো মশা।
ক্ষুদ্র এই প্রাণীটির কামড় শুধু শরীরে অস্বস্তিই তৈরি করে না, বরং মারাত্মক কিছু রোগের কারণও হতে পারে। বিশ্বজুড়ে মশা বিভিন্ন ধরণের রোগ ছড়ানোর জন্য পরিচিত, যা জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির জন্য এক বিরাট হুমকি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মশা হলো বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক প্রাণী।
মশার কামড় কেন এত ভয়ঙ্কর? আসলে, স্ত্রী মশা ডিম পাড়ার জন্য মানুষের রক্ত পান করে। পুরুষ মশা ফুলের মধু খেয়ে জীবন ধারণ করে।
মশা তার প্রোবোসিস নামক একটি বিশেষ অঙ্গ ব্যবহার করে চামড়ার নিচে প্রবেশ করে এবং রক্ত শোষণ করে। মশার লালাতে এমন কিছু উপাদান থাকে যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করার পরে অ্যালার্জি তৈরি করে এবং সেই কারণেই কামড়ের স্থানে চুলকানি হয়।
মশার কামড়ের মাধ্যমে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়ার মতো মারাত্মক রোগ ছড়াতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় দুই কোটিরও বেশি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং এর ফলস্বরূপ ৬ লক্ষের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশেও ডেঙ্গু একটি পরিচিত সমস্যা, যা বর্ষাকালে মারাত্মক রূপ নেয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, যা উদ্বেগের কারণ।
মশা থেকে বাঁচতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। মশাদের ডিম পাড়ার স্থানগুলো, যেমন—জমাটবদ্ধ জল, পরিষ্কার করে মশার বংশবিস্তার রোধ করা যায়। বাড়ির আশেপাশে জল জমা হতে দেওয়া উচিত না।
ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও, মশা তাড়ানোর স্প্রে এবং লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের মশা তাড়ানোর স্প্রে পাওয়া যায়, যা মশা থেকে বাঁচতে সহায়ক হতে পারে।
বর্তমানে, বিশ্বজুড়ে মশা তাড়ানোর বাজার প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। বাংলাদেশেও মশা তাড়ানোর সামগ্রীর চাহিদা বাড়ছে।
মশা নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি আমাদের সকলের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। আসুন, আমরা সবাই মিলে মশা নিধনে কাজ করি এবং সুস্থ জীবন গড়ি।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল এন্ড লেজার