বিখ্যাত মার্কিন কমেডিয়ান এবং টক শো হোস্ট জে লেনো, যিনি একসময় সারা বিশ্বে পরিচিত ছিলেন, বর্তমানে তার স্ত্রীর দেখাশোনার দায়িত্বে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তার স্ত্রী ম্যাভিস ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে ভুগছেন।
এই কঠিন সময়েও, লেনো তার স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার গভীরতা এবং তাদের দাম্পত্য জীবনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে, লেনো তার বর্তমান জীবনযাত্রা সম্পর্কে কথা বলেছেন।
তিনি জানান, কিভাবে তিনি ম্যাভিসের দেখাশোনা করেন এবং এই পরিস্থিতিতে কিভাবে ইতিবাচক থাকতে চেষ্টা করেন।
“ইন ডেপথ উইথ গ্রাহাম বেনসিঙ্গার”-এর সঙ্গে আলাপকালে, লেনো বলেন, একজন যত্নকারীর ভূমিকা পালন করাটা বেশ কঠিন, তবে তিনি এতে আনন্দ পান।
তিনি বলেন, “বিয়ের সময় তো একটা অঙ্গীকার করা হয়।
সেই অঙ্গীকার কি আমি রাখবো, নাকি স্ত্রীর কিছু হলে অন্য কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে যাবো? না, আমি তা করিনি।
আমি আমার স্ত্রীর সাথে সময় কাটাতে ভালোবাসি।
আমি বাড়ি যাই, তার জন্য রান্না করি, টিভি দেখি এবং সবকিছু ঠিকঠাক চলে।”
লেনো আরও জানান, তারা আগে যা করতেন, এখনো তাই করেন, তবে এখন তাকে ম্যাভিসকে খাওয়াতে হয় এবং অন্যান্য অনেক কিছুই করতে হয়।
তিনি বলেন, “তবে আমি এটা পছন্দ করি।
আমি তাকে দেখাশোনা করতে ভালোবাসি।”
ম্যাভিস একজন স্বাধীনচেতা নারী, তাই তার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে ভালো লাগে, যোগ করেন লেনো।
গত বছর, লেনো তার স্ত্রীর সম্পত্তির অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেন।
তিনি স্মৃতি ফেরানোর জন্য ম্যাভিসের সাথে ফ্ল্যাশ কার্ড ব্যবহার করেন।
এই ফ্ল্যাশ কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে মাঝে মাঝে মজার ঘটনাও ঘটে।
লেনো বলেন, “ডিমেনশিয়া রোগীদের সঙ্গে যারা থাকে, তারা অনেক সময় তাদের কথা ভুলে যায়।
আমি ফ্ল্যাশ কার্ডে ছবি দেখাই, আর বলি, ‘মনে আছে? মনে আছে?’ এটা বেশ মজার।
আমি বলি, ‘প্রিয়, ইনি বারাক ওবামা।
আমাদের ডিনার মনে আছে?’ তখন তিনি কার্ডের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘আমি তো নই!’ তখন আমি বলি, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, তুমিই তো!’”
লেনো আরও যোগ করেন, “আপনাকে এর মধ্যে হাসি খুঁজে নিতে হবে।”
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, যেখানে পরিবারের প্রতি যত্ন এবং বয়স্কদের প্রতি সম্মান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সেখানে জে লেনোর এই আত্মত্যাগ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তার এই ভালোবাসাপূর্ণ আচরণ আমাদের সমাজের জন্য একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তথ্যসূত্র: সিএনএন