সঙ্গীত জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন, প্রয়াত ডেভিড থমাস।
গত সপ্তাহে ৭২ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন ডেভিড থমাস। তিনি ছিলেন “পেরে উবু” নামক অগ্রগামী রক ব্যান্ডের প্রধান শিল্পী। ডেভিড থমাস শুধু একজন শিল্পী ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন সঙ্গীতের প্রচলিত ধারাকে ভেঙে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে চাওয়া একজন মানুষ।
তাঁর কাজগুলি সঙ্গীতের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
১৯৭০-এর দশকে, যখন রক সঙ্গীত তার জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল, সেই সময়ে ডেভিড থমাস “পেরে উবু” গঠন করেন। তাঁদের সঙ্গীত ছিল গতানুগতিকতার বাইরে, যা “আর্ট রক”, “গ্যারেজ রক” এবং “এক্সপেরিমেন্টাল” ধারার এক মিশ্রণ ছিল।
তাঁদের শব্দ এবং পরিবেশনার ধরন ছিল খুবই স্বতন্ত্র। “পেরে উবু”-র সঙ্গীতের গভীরতা ও ভিন্নতা তাঁদের শ্রোতাদের মাঝে অন্যরকম এক উন্মাদনা তৈরি করেছিল।
ডেভিড থমাসের সঙ্গীতের যাত্রা শুরু হয় “রকেট ফ্রম দ্য টম্বস” নামক একটি ব্যান্ড দিয়ে, যা পরবর্তীতে “পাঙ্ক” সঙ্গীতের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
“পেরে উবু” গঠিত হওয়ার পরে, তাঁরা “পোস্ট-পাঙ্ক” ধারার জন্ম দেয় এবং সঙ্গীত জগতে নিজেদের একটি বিশেষ স্থান তৈরি করে। তাঁদের সঙ্গীত “জয় ডিভিশন”, “গ্যাং অফ ফোর”, “সনিক ইয়ুথ”-এর মতো ব্যান্ডগুলোকে অনুপ্রাণিত করেছিল।
ডেভিড থমাসের কণ্ঠস্বর এবং মঞ্চে তাঁর উপস্থিতি ছিল খুবই শক্তিশালী। তিনি তাঁর গানে প্রায়শই সমাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলতেন, যা শ্রোতাদের মধ্যে গভীর চিন্তাভাবনার জন্ম দিতো।
সঙ্গীত সমালোচকদের মতে, ডেভিড থমাস ছিলেন একজন “আর্টিস্ট”। তিনি কখনোই বাণিজ্যিক সাফল্যের পেছনে ছোটেননি, বরং সঙ্গীতের প্রতি তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখেছিলেন। তিনি সবসময় চেয়েছেন নতুন কিছু করতে, যা তাঁর কাজগুলোতে স্পষ্ট দেখা যায়।
তাঁর প্রতিটি গান যেন এক একটি গল্প, যা শ্রোতাদের মনকে নাড়া দেয়। তাঁর কাজগুলি প্রমাণ করে যে, সঙ্গীত শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি পরিবর্তনেরও হাতিয়ার হতে পারে।
ডেভিড থমাসের প্রয়াণে সঙ্গীত জগতে এক গভীর শূন্যতা তৈরি হয়েছে। তবে তাঁর সৃষ্টিগুলো আজও সঙ্গীত প্রেমীদের হৃদয়ে বেঁচে আছে। তাঁর গানগুলি নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে, যারা সঙ্গীতের প্রচলিত ধারা ভেঙে নতুন কিছু করতে চায়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান