ম্যাক্সেন্স ল্যাক্রোয়া: ‘একদিন ফ্রান্স দলে খেলব, এখন কাপ জিততে চাই!’

ক্রিস্টাল প্যালেস-এর হয়ে এফ এ কাপ জেতার স্বপ্ন দেখছেন ফরাসি ডিফেন্ডার ম্যাক্সেন্স লাক্রোয়া।

বর্তমান ফুটবল বিশ্বে, খেলোয়াড়দের দেশপ্রেম এবং ক্লাবের প্রতি আনুগত্য প্রায়শই আলোচনার বিষয়। এই প্রেক্ষাপটে, ক্রিস্টাল প্যালেস-এর ফরাসি ডিফেন্ডার ম্যাক্সেন্স লাক্রোয়ার কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ফ্রান্সের হয়ে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন তাঁর চোখে, তবে আপাতত তাঁর সম্পূর্ণ মনোযোগ এফ এ কাপ জয়ের দিকে।

এই মুহূর্তে, লাক্রোয়া-এর মা তাঁর চেয়েও বেশি চিন্তিত, কারণ সেমিফাইনাল ম্যাচটি তাঁর ছেলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। খেলোয়াড় জীবনের কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে একজন ফুটবলারের সাফল্যের শিখরে পৌঁছানো যে কতটা আনন্দের, তা তিনি ভালো করেই জানেন।

ছোটবেলায় ফ্রান্সের অজাত গ্রামে বেড়ে ওঠা লাক্রোয়া-এর ডাক্তার হওয়ার কোনো ইচ্ছে ছিল না, মায়ের স্বপ্ন পূরণ করার থেকে তাঁর কাছে ফুটবলই ছিল ধ্যান-জ্ঞান। এক সময় ফ্রান্সের সোশো ক্লাব থেকে জার্মানির ওল্ফসবার্গ-এ পাড়ি জমান তিনি। পরে, তাঁর পুরনো ম্যানেজার অলিভার গ্লাসনারের অধীনে তিনি যোগ দেন ক্রিস্টাল প্যালেসে।

ফুটবল মাঠে লাক্রোয়ার দৃঢ়তা এবং রক্ষণভাগের প্রধান হিসেবে তাঁর ভূমিকা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। আসন্ন সেমিফাইনালে অ্যাস্টন ভিলার বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে, তিনি জানিয়েছেন, দলের সবাই মিলে কাপ জেতার জন্য মুখিয়ে আছেন। লাক্রোয়া বিশ্বাস করেন, দলের মধ্যেকার বোঝাপড়া এবং খেলোয়াড়দের মধ্যেকার আত্মত্যাগই তাঁদের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

একদিন আমি অবশ্যই জাতীয় দলে খেলব, তবে এখন আমাদের লক্ষ্য এফ এ কাপ জয় করা।

লাক্রোয়া

শুধু মাঠের পারফরম্যান্স নয়, মাঠের বাইরের কিছু বিষয়ও দলটিকে একতাবদ্ধ করেছে। দলের অনেক খেলোয়াড়ই খ্রিস্টান এবং তাঁদের মধ্যে গভীর আধ্যাত্মিক সম্পর্ক বিদ্যমান। লাক্রোয়ার মতে, খেলার আগে সবাই মিলে প্রার্থনা করাটা এখন স্বাভাবিক ঘটনা। তিনি নিজেকে দলের ‘পুরোহিত’ হিসেবে দেখেন, যিনি বাইবেল এবং যিশুর বাণী নিয়ে আলোচনা করেন এবং অন্যদের মধ্যে সেই জ্ঞান বিতরণের চেষ্টা করেন।

লাক্রোয়া-এর জীবনে তাঁর মায়ের অবদান অনস্বীকার্য। মা সবসময় তাঁকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেন। খেলোয়াড় জীবনে ভালো করার জন্য মায়ের উৎসাহ এবং পরামর্শ তাঁর কাছে খুবই মূল্যবান।

ওল্ফসবার্গে খেলার সময় জোশুয়া গুইলাভোগুই-এর পরামর্শে তিনি ইংরেজি শিখেছিলেন। বর্তমানে, তিনি লিডসে খেলেন এবং ক্রিস্টাল প্যালেসে যোগ দিতেও তিনি সাহায্য করেছিলেন। লাক্রোয়ার মতে, গ্লাসনার একজন অসাধারণ প্রশিক্ষক। তাঁর তত্ত্বাবধানে একজন সাধারণ খেলোয়াড়ও ভালো পারফর্ম করতে পারে, কারণ তিনি খেলোয়াড়দের সেরাটা দিতে উৎসাহিত করেন।

ওয়েম্বলিতে প্রায় ৩৫,০০০ দর্শকের সামনে খেলার জন্য মুখিয়ে আছেন লাক্রোয়া। তিনি বিশ্বাস করেন, তাঁদের সমর্থকেরা যেন মাঠের দ্বাদশ খেলোয়াড়। দর্শকদের সমর্থন তাঁদের নতুন উদ্যম জোগায় এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও লড়াই চালিয়ে যেতে সহায়তা করে। ডিসেম্বরে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে করা গোলের পর তাঁর উদযাপন এখনো ফুটবল প্রেমীদের মনে গেঁথে আছে। শনিবারের ম্যাচেও তেমন কিছু করার প্রত্যাশা তাঁর।

এবারের এফ এ কাপ জয় করে ক্রিস্টাল প্যালেস যেন তাদের দীর্ঘদিনের ট্রফির খরা কাটাতে পারে, সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *