এলন মাস্ক: আমেরিকার বুকে বিভীষিকা, ধ্বংসের খেলায় কোটি কোটি টাকা!

বিশ্বের শীর্ষ ধনী এলন মাস্কের সহায়তায় প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত কিছু সিদ্ধান্তের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সরকারি কাজে ব্যাপক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (DOGE) নামে একটি বিভাগ তৈরি করা হয়।

এই বিভাগের প্রধান হিসেবে ছিলেন এলন মাস্ক। বিভাগটির মূল উদ্দেশ্য ছিল সরকারি কর্মীদের ছাঁটাই করা, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের বাজেট কমানো এবং বৈদেশিক সাহায্য বন্ধ করা।

যুক্তরাষ্ট্রের ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্কে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটে, যা ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে গণহত্যা’ নামে পরিচিতি পায়। এর ফলে পার্কের রক্ষণাবেক্ষণ ও সেবার মান কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।

একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয় দেশটির ভেটেরান্স অ্যাফেয়ার্স বিভাগে। সরকারি কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এবং তারা চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়েন।

DOGE-এর প্রধান লক্ষ্য ছিল বৈদেশিক সাহায্য কমানো। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের মোট বাজেটের এক শতাংশেরও কম অর্থ বিদেশি সাহায্য খাতে ব্যয় হয়, তবুও এই খাতে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হয়।

বিশেষ করে, ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (USAID)-এর কার্যক্রম বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। এই সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্যসহ নানা ধরনের সাহায্য করে আসছিল।

এলন মাস্ক ও তাঁর দল USAID-কে দুর্নীতির আখড়া হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং এর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের ‘অপরাধী’ হিসেবে অভিহিত করেন। এর ফলস্বরূপ, বিভিন্ন দেশে সাহায্য কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং খাদ্য ও ঔষধ সরবরাহ ব্যাহত হয়।

এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন অনেকে। সমালোচকদের মতে, সরকারি কর্মীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করা এবং তাদের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করা একটি খারাপ দৃষ্টান্ত।

ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান জহানা হেইস একে ‘আবর্জনা ফেলার পরিবর্তে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার’ সঙ্গে তুলনা করেন।

DOGE-এর কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর মধ্যে ছিল হিসাবের গরমিল। যেমন, একটি ICE (Immigration and Customs Enforcement) কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে ৮ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয়ের দাবি করা হলেও, পরে জানা যায় প্রকৃত সাশ্রয়ের পরিমাণ ছিল ৮ মিলিয়ন ডলার।

এদিকে, এলন মাস্কের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের জেরে তাঁর মালিকানাধীন টেসলা কোম্পানির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ দেখা যায়। টেসলার শোরুম ও চার্জিং স্টেশনে হামলার ঘটনা ঘটে এবং এর প্রতিবাদে অনেকে তাদের গাড়িতে ‘এলন পাগল হওয়ার আগে কিনেছি’ -এরকম স্টিকার লাগাতে শুরু করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এলন মাস্কের এই ভূমিকা ট্রাম্পের জন্য কতটা সহায়ক হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেউ কেউ মনে করেন, মাস্ক এখন ট্রাম্পের জন্য একটি ‘দায়’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

তবে, ট্রাম্প এখনো মাস্কের পাশে রয়েছেন এবং তাঁর কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করছেন।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *