মুনকে অভিযুক্ত করায় ক্ষোভ, ন্যায়বিচারের দাবি!

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মুন-এর বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা?: নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি

সিউল, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে: প্রাক্তন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি মুন জায়ে-ইন-কে সম্প্রতি ঘুষের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি এই অভিযোগকে ‘অন্যায়’ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন। মুন মনে করেন, প্রসিকিউটররা তাদের ক্ষমতা অপব্যবহার করছেন এবং এই মামলাটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল।

জানা গেছে, ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকালে মুন-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তিনি একটি বাজেট এয়ারলাইন্সের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, মুন-এর জামাতা ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত থাই ইস্টা এয়ার জেট নামক একটি বিমান সংস্থায় কোনো কাজ না করেই মোটা অঙ্কের বেতন পেতেন। এই ঘটনার সূত্র ধরেই মূলত ঘুষের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রসিকিউটরদের মতে, মুন এই সুবিধা পাইয়ে দিতে সরাসরি কোনো পদক্ষেপ না নিলেও, ওই এয়ারলাইন্সের প্রতিষ্ঠাতা লি সাং-জিক-এর কাছ থেকে তিনি আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন, যিনি পরবর্তীতে মুন-এর নির্বাচনী প্রচারণায়ও কাজ করেছিলেন। লি-কে পরে সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত কোরিয়া স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজস অ্যান্ড স্টার্টআপস এজেন্সির প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং মুন-এর দল থেকে সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল।

মুন-এর রাজনৈতিক মিত্ররা এই অভিযোগকে আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের সম্মানহানির উদ্দেশ্যে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল-এর সমর্থকদের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন। আগামী ৩রা জুন দক্ষিণ কোরিয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন নেতাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। প্রায়শই দেখা যায়, মেয়াদ শেষের দিকে অথবা ক্ষমতা ছাড়ার পরেই তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ ওঠে। যেমন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল-এর বিরুদ্ধেও একসময় সামরিক আইন জারির অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল, যার কারণে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন।

ঘুষের পরিমাণ হিসেবে ২17 মিলিয়ন কোরিয়ান ওয়ন (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯২ লক্ষ টাকার সমান, ২৯শে মে ২০২৪ তারিখের বিনিময় হার অনুযায়ী) উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং আসন্ন নির্বাচনের ওপর এর প্রভাব নিয়েও আলোচনা চলছে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *