৫০০ দিন পর, ভ্যালেরি’র ঘরে ফেরা: ড্যাক্সহাউন্ডের জীবনযুদ্ধ জয়!

অস্ট্রেলিয়ার একটি দ্বীপে ৫২৯ দিন পালিয়ে থাকার পর অবশেষে উদ্ধার করা হলো ভ্যালেরি নামের একটি ক্ষুদে ড্যাক্সহাউন্ড কুকুরকে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে কানগারু আইল্যান্ডে হারিয়ে গিয়েছিল ছোট্ট এই কুকুরটি। সম্প্রতি প্রাণী সংরক্ষণকর্মীদের তৎপরতায় তাকে খুঁজে পাওয়া গেছে।

কানগারু আইল্যান্ড, যা অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত, বন্যপ্রাণীর জন্য সুপরিচিত। এখানেই ঘটেছিল এই বিরল ঘটনাটি। জানা যায়, নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দা জর্জিয়া গার্ডনার এবং জশ ফিশলক তাদের পোষ্য ভ্যালেরিকে নিয়ে অবকাশ যাপনে গিয়েছিলেন। তারা স্টোকস বে’তে থাকাকালীন সময়ে ক্যাম্পিং সাইট থেকে পালিয়ে যায় ভ্যালেরি। এরপর থেকেই শুরু হয় তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা।

কুকুরটি হারিয়ে যাওয়ার পর স্থানীয় ও বিভিন্ন সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকেরা তাকে খুঁজে বের করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালান। তারা ক্যামেরা, ফাঁদ এবং অন্যান্য কৌশল ব্যবহার করেন। কানগালা ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউয়ের কর্মীরা জানিয়েছেন, কুকুরটিকে খুঁজে বের করতে কয়েক সপ্তাহ ধরে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাদের নিরলস প্রচেষ্টার ফলেই ভ্যালেরিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, ভ্যালেরিকে খুঁজে বের করতে প্রায় ১০০০ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে এবং দ্বীপের ৫০০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিতে হয়েছে তাদের।

এই ঘটনার খবর দ্রুত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরে। নিউইয়র্ক টাইমস সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ভ্যালেরির পালিয়ে থাকার গল্প প্রকাশিত হয়। ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্রে উল্লেখ করা হয়, কিভাবে সে সাপ ও ঈগল পাখির চোখ এড়িয়ে এতদিন টিকে ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কানগারু আইল্যান্ড সিঙ্গাপুরের চেয়ে ছয়গুণ বড়। এখানকার প্রকৃতি এখনো অনেক বন্য। মাঝে মাঝে এখানে দাবানলও লাগে। এমন পরিবেশে একটি কুকুরের ৫২৯ দিন টিকে থাকা সত্যিই একটি অসাধারণ ঘটনা।

কুকুরটির মালিক জর্জিয়া গার্ডনার এবং জশ ফিশলক তাদের প্রিয় পোষ্যকে ফিরে পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। তাদের ভাষায়, “ভ্যালেরিকে ফিরে পাওয়াটা আমাদের জন্য অনেক বড় আনন্দের।” প্রাণী উদ্ধার এবং তাদের প্রতি ভালোবাসার এই গল্পটি বিশ্বজুড়ে মানুষের মনে গভীর দাগ কেটেছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *