জার্মান পুলিশের গুলিতে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ, বিচার চেয়ে ফুঁসছে দেশ!

জার্মানিতে পুলিশের গুলিতে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যু, উঠেছে বর্ণবাদের অভিযোগ।

জার্মানিতে পুলিশের গুলিতে ২১ বছর বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় দেশটিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ওল্ডেনবার্গ শহরে গত রবিবার রাতের বেলা একটি নাইটক্লাবের বাইরে এই ঘটনা ঘটে। নিহত যুবকের নাম লরেন্স এ।

ঘটনার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মানবাধিকার কর্মীরা এবং স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তারা।

পুলিশের ভাষ্যমতে, লরেন্সকে নাইটক্লাবে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় তিনি নিরাপত্তা কর্মীদের ওপর পেপার স্প্রে করেন এবং তাদের ছুরি দেখিয়ে ভয় দেখান। পরে, যখন পুলিশ তাকে ধরতে যায়, তখন তিনি আবারও স্প্রে করেন এবং এক পুলিশ কর্মকর্তার দিকে তেড়ে আসেন।

এরপরই ওই পুলিশ কর্মকর্তা গুলি চালান।

তবে, ঘটনার তদন্তে নতুন মোড় আসে ময়নাতদন্তের ফলে। এতে জানা যায়, লরেন্সের শরীরে অন্তত তিনটি গুলি লেগেছিল পেছন থেকে। তার মাথার পেছনে, কোমরে এবং শরীরে গুলি লাগে।

চতুর্থ একটি গুলি তার উরুতে লেগেছিল। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর লরেন্সের মৃত্যু হয়।

এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড্যানিয়েলা বেহরেন্স বলেছেন, ময়নাতদন্তের ফল গুরুতর প্রশ্ন তৈরি করেছে, যার উত্তর খুঁজে বের করতে হবে।

পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য কোনো মন্তব্য করার আগে সকলকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে। ঘটনার তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জার্মানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পুলিশের এই হত্যাকাণ্ড পুরো সমাজে প্রভাব ফেলেছে এবং বর্ণবাদের শিকার হওয়া সকল মানুষের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ।

তারা পুলিশের পরিবর্তে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। ব্ল্যাক পিপল ইন জার্মানি ইনিশিয়েটিভ (আইএসডি) নিহত লরেন্সের বন্ধুদের উদ্ধৃত করে জানায়, তিনি ছিলেন একজন হাসিখুশি, প্রাণবন্ত এবং বাস্কেটবল খেলতে ভালোবাসতেন।

ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের সূত্র ধরে জার্মানিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

এর আগে, ২০২০ সালে, উত্তর রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের ২৯ জন পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল, যখন তাদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে চরম ডানপন্থী মন্তব্য এবং ছবি শেয়ার করার অভিযোগ ওঠে।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং লরেন্সের প্রতি সমর্থনকারীরা শুক্রবার ওল্ডেনবার্গে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছে।

এই ঘটনা জার্মানিতে পুলিশের কার্যক্রম এবং বর্ণবাদ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *