কাশ্মীরে রক্তের হোলি: পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় শোকের ছায়া!

জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২৬ পর্যটকের পরিবারে শোকের ছায়া, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি

জম্মু ও কাশ্মীরে সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারগুলোতে শোকের মাতম চলছে, সেই সাথে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অঞ্চলের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে কেন্দ্র করে এই ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে কয়েকজন ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত, যারা পরিবার পরিজনদের সাথে সুন্দর সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে ভ্রমণে এসেছিলেন। আবার, অনেকে ছিলেন পরিবারের অসুস্থ স্বজনের মানসিক শান্তির জন্য কাশ্মীর ভ্রমণে আসা মানুষ।

নিহতদের মধ্যে ছিলেন রামচন্দ্র নারায়ণমেনন। যিনি কয়েক দশক ধরে কাতার এ চাকরি করার পর সম্প্রতি অবসর জীবন যাপন শুরু করেছিলেন। বন্ধু বালচন্দ্র মেননপরাম্বিল জানান, রামচন্দ্র স্ত্রী, কন্যা এবং নাতি-নাতনিদের নিয়ে কাশ্মীর ভ্রমণে গিয়েছিলেন। তাদের আনন্দের দিনগুলো পরিণত হয়েছে বেদনায়।

এই হামলায় নিহত হন সঞ্জয় লেলে, হেমন্ত জোশি এবং অতুল মনে নামের আরও তিনজন। তারা সবাই মুম্বাইয়ের বাসিন্দা ছিলেন এবং পরিবার নিয়ে পাহালগামে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সঞ্জয়ের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সঞ্জয়ের স্ত্রী শারীরিক অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীর ভ্রমণে যেতে পারছিলেন না। সুস্থ হওয়ার পর সবাই মিলে কাশ্মীর যাওয়ার পরিকল্পনা করেন, কিন্তু তাদের সেই আনন্দযাত্রা শেষ হয় মর্মান্তিকভাবে।

এই ঘটনার পর ভারত সরকার পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। ভারতের অভিযোগ, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ রয়েছে। এর ফলস্বরূপ, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে এবং গুরুত্বপূর্ণ জল চুক্তি স্থগিত করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জম্মু ও কাশ্মীরের এই পরিস্থিতি সেখানকার সাধারণ মানুষের জীবনকে কঠিন করে তুলেছে। এখানকার অধিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতা ও অস্থিরতার মধ্যে বসবাস করছে। এই হামলার পর নিহতদের পরিবারের সদস্যরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

জম্মু ও কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর এই হামলার ঘটনা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও কঠিন করে তুলেছে। এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *