নাক-এর অস্ত্রোপচার: সমালোচনার আগুনে পুড়ছেন মডেল, ৮ হাজার ডলারের পর?

শিরোনাম: নাক সার্জারির পর মডেলের অভিজ্ঞতা: অনলাইন সমালোচনার শিকার হয়ে মানসিক উদ্বেগে ভোগা।

একজন তরুণ মডেল, হেইলি লেইন, দীর্ঘদিন ধরে নিজের চেহারায় পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। অবশেষে, তিনি বহুদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে নাক সার্জারি করান।

কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর অনলাইনে আসা প্রতিক্রিয়ার ঢেউয়ে তিনি যেন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তাঁর এই অভিজ্ঞতা শুধু একটি অস্ত্রোপচারের গল্প নয়, বরং এটি অনলাইনে সমালোচনার শিকার হয়ে একজন মানুষের মানসিক অবস্থার ওপর এর প্রভাবের প্রতিচ্ছবি।

হেইলি ছোটবেলা থেকেই নিজের নাকের গড়ন নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। মডেলিং জগতে প্রবেশের পর বিষয়টি নিয়ে তিনি তাঁর এজেন্টের সঙ্গে কথা বলেন, কিন্তু তাঁরা তাঁকে চেহারা পরিবর্তনের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করেন।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই বিষয়ে তাঁর আগ্রহ আরও বাড়ে, এবং অবশেষে তিনি সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্ত কোনো চাপিয়ে দেওয়া বিষয় ছিল না, বরং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজের ভালো থাকার উদ্দেশ্যে তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

নাক সার্জারির জন্য হেইলি প্রায় ৮,০০০ মার্কিন ডলার খরচ করেন, যার মধ্যে একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার জন্য ১,৪০০ ডলার ব্যয় হয়। অস্ত্রোপচারের পর প্রথম কয়েক দিন তিনি ঔষধের কারণে কিছুটা দুর্বল অনুভব করছিলেন, কিন্তু অস্ত্রোপচারের ফলাফল দেখার জন্য তাঁর মধ্যে ছিল প্রবল আগ্রহ।

অস্ত্রোপচারের পর যখন তিনি অনলাইনে তাঁর ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেন, তখন নেতিবাচক মন্তব্যের ঝড় বয়ে যায়। অনেকেই তাঁর চেহারা নিয়ে বিদ্রূপ করতে শুরু করেন, যা তাঁকে গভীরভাবে আহত করে।

এই সমালোচনার কারণে হেইলি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তিনি প্রায়ই আয়নায় নিজের চেহারা দেখতেন এবং হতাশ হয়ে পড়তেন। বন্ধুদের কাছে কান্নাকাটি করে নিজের সিদ্ধান্তের ভুল স্বীকার করতেন।

এই সময়টাতে তিনি ঘর থেকে বের হতেও ভয় পেতেন, কারণ তাঁর মনে হতো সবাই তাঁর অস্ত্রোপচার নিয়ে কথা বলছে।

তবে, ব্যক্তিগতভাবে পরিচিতদের মধ্যে অনেকেই তাঁর চেহারার পরিবর্তন সেভাবে লক্ষ্য করেননি। অনলাইনে পাওয়া প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে বাস্তবতার এই ফারাক তাঁকে আরও বেশি হতাশ করে তোলে।

অস্ত্রোপচারের পাঁচ মাস পর তাঁর নাকে সংক্রমণ হয়। দ্রুত তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ নেন এবং যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

হেইলি লেইন তাঁর এই অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অন্যদের সচেতন করতে চান। তিনি মনে করেন, অনলাইনে সৌন্দর্য নিয়ে আলোচনা এবং সমালোচনার ক্ষেত্রে আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।

অস্ত্রোপচারের আগে ভালোভাবে সবকিছু জেনে এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

এই ঘটনার পর হেইলি ধীরে ধীরে তাঁর আত্মবিশ্বাস ফিরে পান। তিনি বুঝতে পারেন, অন্যের মতামতের চেয়ে নিজের ভালো থাকা বেশি জরুরি।

এখন তিনি তাঁর নতুন চেহারা ভালোবাসেন এবং তাঁর এই যাত্রা অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তিনি চান, এই অভিজ্ঞতা থেকে অন্যরা শিক্ষা গ্রহণ করুক এবং অনলাইনে সমালোচনার শিকার হওয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সচেতন হোক।

তথ্যসূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *